
চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে লিজ দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তকে 'আত্মঘাতী' আখ্যায়িত করে এর তীব্র বিরোধিতা করেছে বাংলাদেশ ন্যাপ। শনিবার (১৭ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, যে কোনো মূল্যে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই এই বন্দরের পরিচালনা নিশ্চিত করতে হবে। অভিজ্ঞতার দোহাই দিয়ে জাতীয় অর্থনীতির প্রধান লাইফলাইন চট্টগ্রাম বন্দরকে বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত দেশের জনগণ মেনে নেবে না।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত প্রধান সমুদ্র বন্দর বিদেশি কোম্পানির তত্ত্বাবধানে পরিচালনা করার তৎপরতা জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থি। এই সিদ্ধান্ত দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার জন্য হুমকির কারণ হতে পারে। জনগণের নির্বাচিত সরকার ছাড়া এই ধরনের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া দেশের জন্য বুমেরাং হতে পারে বলে তারা উল্লেখ করেন।
তারা আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশি কোনো কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হবে আত্মঘাতী ও অদূরদর্শী। দেশ ও দেশের জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ কোনো সরকার আমাদের প্রধান সমুদ্রবন্দরকে বিদেশিদের হাতে তুলে দিতে পারে না। তাছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের এতবড় জাতীয় স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার কোনো এখতিয়ার নেই বলেও তারা দাবি করেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নিজস্ব অর্থায়নে চালু হওয়া দেশের বৃহত্তর এই কনটেইনার পোর্টটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে গত ১৭ বছর ধরে লাভজনকভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। সরকারের ঘোষণার ফলে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের সরকার ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে উঠেপড়ে লেগেছে কিনা। এই টার্মিনালে বিশ্বের সর্বাধুনিক গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ আধুনিক প্রযুক্তিও যুক্ত করা হয়েছে। প্রয়োজনে বন্দরের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় আরও আধুনিক প্রযুক্তি আমদানি করারও সুযোগ রয়েছে। জাতীয় সক্ষমতা অর্জনের এই পথে না হেঁটে সরকার বন্দরে বিদেশ নির্ভরতার যে পথে হাঁটছে, তা কোনোভাবেই দেশবাসী মেনে নিতে পারে না বলে বাংলাদেশ ন্যাপের নেতারা জোর দেন।
Comments