
বিএনপিই প্রথম ১৯৭৫ এ সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে মুক্ত করেছে। তার আগে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা (বাকশাল) হয়েছিল। সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। বলেছেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দায়িত্বে নেয়ার পর সংবাদমাধ্যমগুলো চালু করেছেন, স্বাধীনতা দিয়েছেন। আমরা বলি না যে, আমরা একেবারে ধোয়া তুলসী পাতা। কিন্তু নিঃসন্দেহে বিএনপি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য বেশি কাজ করেছে।
রোববার বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
সরকারে থাকি আর না থাকি। বিএনপি কখনও অন্যায়ভাবে অন্যের মতকে চাপিয়ে দেয়াকে সমর্থন করবে না মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি বরাবরই সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতে থাকবো।
বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়টি নতুন নয় জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যারা দেশের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছি, সেই ষাটের দশক থেকে। তখন থেকে এ বিষয়টি সবচেয়ে সামনে এসেছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেই সময়েও আমরা কথা বলেছি, আন্দোলন করেছি, কাজ করেছি। তবে সেসময় একটি সুবিধা ছিল। তখন সংবাদমাধ্যমের একটি নিজস্ব স্বকীয়তা ছিল। যেখানে তাদের কোনো গোষ্ঠীভুক্ত করা অতটা সহজ হতো না। তাদের দেশপ্রেম, আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধ অনেক উঁচু দরের ছিল।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিঃসন্দেহে আগের চেয়ে বেড়েছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে প্রায় ১৬ ভাগ বেড়েছে।
জনগণের ওপর আস্থা রাখতে হবে৷ তার চিন্তাভাবনা, তার রায়, তার মতের ওপর আস্থা রাখতে হবে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রের জন্য ‘আমি’ চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। আমাদের সংবাদমাধ্যমে এ চর্চাটা বেশি করা দরকার। গণতন্ত্র চর্চা করার জিনিস।
সংস্কারের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের নিয়ে প্রচারণা চালানো হয়, আমরা নাকি সংস্কারের বিরুদ্ধে। আমরা সংস্কার নয়, নির্বাচন চাই। অথচ সংস্কার বিষয়টিই শুরু হয়েছে আমাদের দ্বারা। বিএনপিই একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করেছে। আমরাই প্রেসিডেন্ট ফর্ম সরকার থেকে পার্লামেন্ট ফর্ম সরকারে গেছি। অনেক অনেক আপত্তি সত্ত্বেও আমরা কেয়ারটেকার সরকারকে সংবিধানে নিয়ে এসেছি। এগুলো বাস্তবতা। ওই বাস্তবতা থেকে অযথা আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করে অন্যভাবে দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এর পেছনে কিছু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকলেও থাকতে পারে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি ও ইংরেজি দৈনিক নিউ এইজের সম্পাদক নুরুল কবীর, কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহবায়ক মো. নাহিদ ইসলাম, সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী প্রমুখ।
Comments