Image description

ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার বুধবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ থাকবে, নেতৃত্বে শেখ হাসিনা থাকবেন না। তাঁর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত নেতারাও বাদ যাবেন। আওয়ামী লীগের পরিচিত কিছু নেতা-নেত্রীকে সামনে রেখে নতুন আওয়ামী লীগ আত্নপ্রকাশ করতে যাচ্ছে।  জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নতুনভাবে সংগঠিত হবার কৌশল নিয়েছে। 

গতকাল দৈনিকটির ছাপা সংস্করণে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ থাকবে, নেতৃত্বে শেখ হাসিনা থাকবেন না। তার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত নেতারাও বাদ যাবেন। আওয়ামী লীগের পরিচিত কিছু নেতা-নেত্রীকে সামনে রেখে নব্য আওয়ামী লীগ বা তথাকথিত পরিচ্ছন্ন আওয়ামী লীগকে বাজারে আনার একটি পরিকল্পনা বাংলাদেশে বেশ এগিয়েছে।

আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতৃত্ব এই প্রয়াসকে ‘প্রতারণা’ ও তাদের ‘দলকে ধ্বংস করার চক্রান্ত’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন। ভারতের কূটনীতিকদের একাংশও মনে করেন, হাসিনাকে বাদ দিয়ে নব্য আওয়ামী লীগ গঠিত হলে দিল্লির পক্ষে তা সুখকর হবে না। কারণ এই পরিকল্পনায় বাংলাদেশের যে সব আওয়ামী লীগ নেতার নাম উঠে আসছে, তাদের ভাবমূর্তি আদৌ পরিচ্ছন্ন নয়, পাকিস্তান-ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিতিও কয়েকজনের আছে।
 
ভারতের এক সাবেক কূটনীতিকের কথায়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে দিল্লির কিছু করণীয় নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগ ঐতিহাসিকভাবে ভারতের বন্ধু ও আস্থাভাজন রাজনৈতিক শক্তি। তার নেতৃত্বও পাকিস্তান-বান্ধবদের হাতে চলে গেলে ভারতের পক্ষে তা বিপর্যয়ের চেয়ে কম কিছু হবে না।

সেনানিবাসে বৈঠকের দাবি করে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর আলোচিত এক ফেসবুক পোস্টের কথা উল্লেখ করে আনন্দবাজার বলেছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাদের কাছে দাবি বলেছেন, হাসনাতের পোস্টের বিষয়ে তারা জানেন। 

ওই আওয়ামী লীগ নেতা আনন্দবাজারকে বলেছেন, হাসনাতের পোস্টের আগেই আমরা চক্রান্তের বিষয়টি জানতে পারি। নামগুলোও নতুন নয়। এভাবে তারা দেখাতে চায়, নির্বাচনে আওয়ামী লীগকেও অংশ নিতে দেওয়া হয়েছে। তবে সেটা হবে প্রতারণা। মানুষকে এভাবে ভুল বোঝানো যায় না।
 
কলকাতায় আত্মগোপনে থাকা এক আওয়ামী লীগ নেতা আনন্দবাজারকে বলেছেন, আপাতত এই ‘রিফাইন্ড’ চক্রান্তই তাদের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন এলাকার আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে, হাসিনার বিরুদ্ধে তোপ দাগলে তাদের নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেয়া হবে। নির্বাচন করতে দেবে।

হাসিনা ঘনিষ্ঠ এই নেতা জানিয়েছেন, কলকাতায় আশ্রয় নেয়া কিছু নেতা এই দিকে ঝুঁকছেন বলে তারা খবর পেয়েছেন। এরা অন্যদেরও টানতে চেষ্টা করছেন। যাদের ‘ক্লিন’ বলা হচ্ছে, তাদের কেউই পরিচ্ছন্ন নন। এদের অনেকে চীন বা পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যবসা করে। সেসব বাঁচাতেই চক্রান্তে রাজি হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের ওই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনন্দবাজার পত্রিকাকে জানিয়েছেন, জেলায় জেলায় ভার্চুয়াল মিটিং করছে দলের নেতৃত্ব। সেই মিটিংয়ে শেখ হাসিনা নিজে যুক্ত হচ্ছেন। ৬৪টি জেলার মধ্যে ২৩টি জেলার কর্মীদের সঙ্গে এই বৈঠক শেষ হয়েছে।