নির্বাচনের নতুন পদক্ষেপ, ভোটের দিন সকালে ব্যালট এবং নজরদারিতে থাকছে বডি ক্যামেরা

আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ৯ জুলাই প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন পরিচালনার কৌশল ও প্রস্তুতি
ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া: 'রাতের ভোট' ঠেকাতে ভোটগ্রহণের দিন সকালে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম ভোটকেন্দ্রে পাঠানো হবে। তবে এসব উপকরণ আগের দিনই জেলা, উপজেলা ও বিভিন্ন অঞ্চলে নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া হবে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা: ভোটের দিন সব কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং দায়িত্বে থাকা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বডিওর্ন ক্যামেরা পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
যানবাহন চলাচল: নির্বাচনকালীন সময়ে ১৫ দিন নির্দিষ্ট রুটের বাইরে অন্য সব যানবাহন, যেমন ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, ট্রাক, লঞ্চ ও ইঞ্জিনচালিত নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। নির্বাচনী এলাকায় সাতদিন মোটরসাইকেল চলাচলও নিষিদ্ধ থাকবে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী: নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও আনসার বাহিনীতে মোট ১৯ হাজার ২৯২ জন সদস্য দ্রুত নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে বাহিনীকে কঠোর হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনিক রদবদল: নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে ডিসি, এসপি, ইউএনও এবং ওসিদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা যাচাই করে বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এসব পদে লটারিভিত্তিক বদলি করা যায় কিনা, তা বিবেচনা করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
ভোটারদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা: ১৮-৩৩ বছর বয়সী তরুণ ভোটার এবং নারী ভোটারদের জন্য আলাদা বুথ ও সহায়ক ব্যবস্থা রাখতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারিক প্রক্রিয়া ও বাজেট
নির্বাচনে অনিয়ম রোধে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট টিম গঠন করা হবে। তারা ভোটের দিন ও তার আগে-পরে সংঘটিত সহিংসতা ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করবেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নামে বাজেটে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম কেনার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের জন্য ২ হাজার ৮০ কোটি টাকা এবং অপ্রত্যাশিত ব্যয়ের জন্য আরও ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।
Comments