Image description

ধর্ম অবমাননার অভিযোগে রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি ইউনিয়নের আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু পরিবারের সার্বিক অবস্থা পরিদর্শন শেষে বিস্তারিত জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল গতকাল সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, ২২টি পরিবারের মধ্যে ১৯টি পরিবার বর্তমানে তাদের বাড়িতেই আছে। কটূক্তিকারী রঞ্জন কুমার রায় এবং তার চাচার পরিবারসহ মোট তিনটি পরিবার পার্শ্ববর্তী গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছেন। 

জেলা প্রশাসক বলেন, সোমবার থেকেই জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বাড়িঘর মেরামত করার কাজ শুরু করা হয়েছে। তিনি পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।

রবিউল ফয়সাল আরও বলেন, ‘বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নিয়োজিত রয়েছে।’

এদিকে রংপুরের পুলিশ সুপার মো. আবু সাইম জানান, হিন্দু পরিবারগুলোর ওপর হামলার ঘটনায় মোট ১২টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই বাড়িগুলোতে ২২টি পরিবার বসবাস করতো। 

তিনি জানান, রঞ্জন আটক হওয়ার পর থেকেই তার বাবা, দাদা এবং চাচার পরিবার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আছেন। অন্যান্য ১৯টি পরিবারের সব পুরুষ সদস্য তাদের নিজ নিজ বাড়িতেই আছেন। ঘরবাড়ি ভাঙ্গা থাকায় কিছু নারী সদস্য মালামাল নিয়ে রিকশাভ্যান যোগে অন্যত্র চলে গেছে। 

স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও এলাকায় সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনতে প্রশাসন ও পুলিশ একসঙ্গে কাজ করছে।ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামত হলে নারী সদস্যসহ সকলেই নিজ নিজ বাড়িতে ফিরবেন বলে জানান রংপুরের পুলিশ সুপার। 

এই হামলার ঘটনায় দায়ীদের শনাক্তকরণের কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে আবু সাইম বলেন, ‘যারা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, গংগাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের একটি গ্রামে এক কিশোরের বিরুদ্ধে ফেসবুকে নবীকে অবমাননার করে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ তুলে সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা ও লু্টতরাজের অভিযোগ উঠে। 

পুলিশ সোমবার তাকে আটকের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। তার বিরুদ্ধে সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা হয়েছে বলেও জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।