Image description

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের পরপরই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসার নির্দেশনা দেয়। উত্তরার চারটি বেসরকারি হাসপাতালে এ পর্যন্ত শিক্ষার্থীসহ ১৫২ জন চিকিৎসা নিয়েছে।

হাসপাতাল-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি নির্দেশনা আসার আগেই তারা মানবিকতার জায়গা থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়েছেন। ঘটনার পর থেকে এ বিষয়ে সরকারের কেউ যোগাযোগ করেনি।

গত সোমবার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে আহত ও দগ্ধদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছুটে যান উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এখানে ১০০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন।

হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. বজলুর রহমান আদিল বলেন, ‘আমরা বার্ন রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত স্যালাইন, ক্রিম, ড্রেসিং সেট সব বিনামূল্যে দিয়েছি। পরে সরকারের ঘোষণা নজরে এসেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তবে এত বড় দুর্ঘটনায় সরকারি উপস্থিতি থাকলে সমন্বয় আরও ভালো হতো। অনেক বেসরকারি সংস্থা সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে, আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, রোগী অনেকে ভয়াবহতা দেখে প্যানিক অ্যাটাক করেছিলেন। উদ্ধারকাজে অংশ নিয়ে কেউ কেউ আহত হন। সামান্য দগ্ধদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। গুরুতর দগ্ধদের ঘটনার দিনই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।

হাসপাতালের উপপরিচালক জানান, দুটি মরদেহ হাসপাতালে আনা হলেও পরে রাতে তাদের বিমানবাহিনীর সদস্যরা নিয়ে যান।

লুবানা জেনারেল হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মিরাজুন নাবী চঞ্চল জানান, তাদের এখানে ২৭ জন এসেছিলেন। গুরুতর ১৪ জনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। ১১ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফিরে যান। একজনের মৃত্যু হয়। বাকি শিক্ষার্থীরা বুধবার হাসপাতাল ছেড়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তিন দিনেও সরকার বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেউ যোগাযোগ করেনি। সরকারি কোনো সহায়তাও আমরা পাইনি।’

উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালের কাস্টমার রিলেশন অফিসার মো. নয়ন জানান, দগ্ধ ১২ শিক্ষার্থী এসেছিল। পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক কর্নেল (অব.) ডা. এ এস এম জুলফিকার আলী জানান, ১৩ জন এসেছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা নেয় আটজন। ভর্তি পাঁচজনের মধ্যে চার শিক্ষার্থী বাড়ি ফিরে গেছে। মাইলস্টোন স্কুলের বাসচালককে আইসিইউতে রাখা হলেও অবস্থার উন্নতি হওয়ায় মঙ্গলবার ওয়ার্ডে দেওয়া হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা মানবিক কারণে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়েছি।’

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘দুর্ঘটনার পরপরই দগ্ধ শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে সব হাসপাতালে চিঠি দেওয়া হয়।’ হাসপাতালগুলোর সঙ্গে পরে কেন যোগাযোগ করা হয়নি প্রশ্নে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।