
বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। চলমান বৃষ্টিপাতের মধ্যেই শুক্রবার (২৩ মে) এ খবর জানানো হয়। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৭ মে পশ্চিম-মধ্য এবং তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এই লঘুচাপ থেকে নিম্নচাপ এবং পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে ‘শক্তি’, যা শ্রীলঙ্কার দেওয়া।
ইতিমধ্যে গতকাল দেশের তিন সমুদ্রবন্দরে (চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা) ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সাগরে বড় আকারের মেঘ সৃষ্টির কারণেই এই সতর্কসংকেত জারি করা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা জানান, বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হওয়ায় উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত আগামী আরও ১০ দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা। বাংলাদেশ সংলগ্ন এলাকায় জড়ো হওয়া গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালার প্রভাবে এই বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, মে মাস সাধারণত ঘূর্ণিঝড়প্রবণ মাস হিসেবে পরিচিত। গত বছর মে মাসেই ঘূর্ণিঝড় রিমাল সৃষ্টি হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছিল। এবারও নিম্নচাপ ও সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের সময় কাছাকাছি।
কাজী জেবুন্নেছা জানান, ২৫ থেকে ২৬ মে’র মধ্যে সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে এবং সেটি নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত করে বলার সময় আসেনি।
তিনি আরও বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার উপযোগী রয়েছে। তবে নিম্নচাপ তৈরি হলে সেটি কোথায় যাবে, কীভাবে শক্তি সঞ্চয় করবে, এসব বিষয় আরও কিছুদিন পর জানা যাবে।
আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা আরও জানিয়েছেন, এবার মৌসুমি বায়ু কিছুটা আগে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে মৌসুমি বায়ু ভারতের কেরালায় অবস্থান করছে এবং আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে এটি কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলের কাছাকাছি আসার সম্ভাবনা রয়েছে। মৌসুমি বায়ুর এই আগাম আগমনের ফলে এবার আগে থেকেই বৃষ্টিপাত শুরু হচ্ছে।
আজ শুক্রবার সকাল ৯টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু মিয়ানমারের আকিয়াব উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
Comments