Image description

অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উভয় ফ্লাইটে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি বহনের সুযোগ থাকলেও, এক্ষেত্রে বেশ কিছু কঠোর নিয়ম মেনে চলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এয়ারলাইনসগুলোর বৈশ্বিক জোট আইএটিএ (International Air Transport Association) এবং আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান পরিবহন সংস্থা আইকাও (International Civil Aviation Organization) এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নিজস্ব কিছু নিয়মাবলীও রয়েছে যা এক্ষেত্রে অনুসরণ করতে হয়।

সাধারণভাবে উড়োজাহাজে অস্ত্র ও গুলি বহনের সবচেয়ে প্রথম শর্ত হলো তা অবশ্যই বৈধ হতে হবে, বা যে ব্যক্তি এটি বহন করবেন, তাঁর অবশ্যই অস্ত্রের লাইসেন্স থাকতে হবে। অস্ত্র বহনের সময় অবশ্যই বৈধ লাইসেন্সটিও সেই ব্যক্তির সঙ্গে থাকতে হবে। বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ৩০ থেকে ৭০ বছর বয়সী কোনো নাগরিক নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করে অস্ত্রের লাইসেন্স পেতে পারেন।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নিয়ম অনুযায়ী, অস্ত্র ও গুলি বহনের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে। আইকাওয়ের অ্যানেক্স ১৭ ও ১৮ ধারায় অস্ত্র ও গুলি পরিবহনের বিষয়গুলো বিস্তারিত উল্লেখ করা আছে।

সাধারণভাবে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে অস্ত্র ও গুলি বহনের ক্ষেত্রে আগ্রহী ব্যক্তিকে আগে থেকেই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনসকে জানাতে হয়। চেকইনের সময় নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনস অস্ত্র ও গুলি বহনের কাজটি সম্পন্ন করবে। প্রত্যেকটি এয়ারলাইনসেরই এ‑সংক্রান্ত নির্দিষ্ট বিধি আছে। সাধারণত উড়োজাহাজে অস্ত্র পরিবহনের জন্য একটি বিশেষ ধরনের কনটেইনার ব্যবহার করা হয়। 

আর গুলি পরিবহনের জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। সাধারণত গুলির ধরন অনুযায়ী আলাদা আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয় বিশেষ ধরনের কনটেইনার।

এর আগেই অবশ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে একটি ঘোষণাপত্র দিতে হবে। এতে সেই অস্ত্র ও গুলির ধরন এবং কী কাজে এসব ব্যবহার হবে, তার বিস্তারিত বর্ণনা থাকতে হবে। 

আর অস্ত্র ও গুলি যদি এক দেশ থেকে আরেক দেশে বহন করতে হয়, সেক্ষেত্রে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে দুই ধরনের অনুমোদন নিতে হয়। যদি ব্যক্তি নিজের ব্যবহারের জন্য অস্ত্র সঙ্গে নিতে চান, তাহলে তাঁকে ব্যক্তিগত ব্যবহারের অনুমতি নিতে হবে। আর যদি অস্ত্র কেনাবেচার উদ্দেশ্যে বহন করেন, তাহলে এ‑সংক্রান্ত ব্যবসা করার অনুমতি থাকতে হবে। 

কোনো দেশ থেকে অস্ত্র ও গুলি বিদেশে পাঠানোর সময় সেই দেশের শুল্ক বিভাগেরও কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। বিশ্বের বেশ কিছু দেশে সামরিক অস্ত্র বা যুদ্ধে ব্যবহার হয়–এমন অস্ত্র ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করা যায় না। এ ধরনের অস্ত্র পরিবহনের বিষয়ে দেশভেদে নানা নিয়ম রয়েছে।