Image description

গুলশান থানার অর্থ পাচার মামলায় বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান খায়রুল বাশার বাহারের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। শুনানির পর্যায়ে বিচারক তার উদ্দেশে বলেন, যত মামলা হয়েছে, মোকাবেলা করতে গেলে তো সারা জীবন কারাগারে কেটে যাবে।

এদিন খায়রুল বাশার বাহারকে আদালতে হাজির করা হয়।

এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপপরিদর্শক খালিদ সাইফুল্লাহ তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে পুলিশ প্রহরায় তাকে কাঠগড়ায় তোলা হয়। এ সময় হেলমেট, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হাতকড়া পরানো ছিল। আদালতের তৃতীয় আসলে উত্তেজিত ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা কিল-ঘুষি, লাথি ও ডিম নিক্ষেপ করেন।

কাঠগড়ায় আসার পর তার হেলমেট খুলে দেওয়া হয়। তখন কালো মাস্ক খুলে হাসতে থাকেন। এরপর তার উপস্থিতিতে শুনানি শুরু হয়। 

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন, কাইয়ুম ইসলাম নয়ন রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন।

অন্যদিকে আসামিপক্ষে তার আইনজীবী কাজী আনিসুর রহমান ও মারুফা আক্তার রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। 
শুনানির এক পর্যায়ে বিচারক তাকে প্রশ্ন করেন, এই কাজগুলো কেন করলেন? তখন তিনি নিশ্চুপ ছিলেন। ফের বিচারক বলেন, কোন কারণে তাদের বিদেশ পাঠাতে ব্যর্থ হন? তাহলে কেন টাকা ফেরত দেননি? তখনও তিনি কোন কিছুর উত্তর দেননি। এরপর বিচারক বলেন, আপনার বিরুদ্ধে কতটা মামলা হয়েছে জানেন? তখন বলেন, আনুমানিক ৭০টা হয়েছে। তখন বিচারক বলেন, যত মামলা হয়েছে, মোকাবেলা করতে গেলে তো সারা জীবন কারাগারে কেটে যাবে।

তখন বিচারক জিজ্ঞাসা করেন, আপনার মানবিক সত্তা জাগ্রত হয়নি? কয়টা বিয়ে করেছেন। উত্তরে তিনি জানান, দুই। তখন আরেক প্রশ্ন করেন, আপনার সন্তান কয়জন? তখন তিনি বলেন, ছয়জন। তখন বিচারক বলেন, টাকা নিয়ে এসব শিক্ষার্থীদের জীবন কেন হুমকির মুখে ফেলে দিলেন। একবারও কি আপনার সন্তানদের কথা মনে পড়েনি? পরে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসামি বাশার, তার স্ত্রী খন্দকার সেলিমা রওশন ও ছেলে আরশ ইবনে বাশার চটকদার বিজ্ঞাপনের ফাঁদে ফেলে সাধারণ ছাত্রছাত্রীর কাছ থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। উচ্চশিক্ষার জন্য ১৪১ শিক্ষার্থীকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে তারা ১৮ কোটি ২৯ লাখ ৫৭ হাজার ৬৮০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ঘটনায় গত ৪ মে সিআইডির উপপরিদর্শক (এসআই) রুহুল আমিন বাদী হয়ে মামলা করেন।