
পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধের মার্কিন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ইসরায়েল ইরানের ওপর এক ভয়াবহ হামলা চালিয়েছিল। এর জবাবে ইরানও পাল্টা আক্রমণ শুরু করলে টানা ১২ দিন ধরে এক তীব্র সংঘাত চলে। এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের ওপর সরাসরি হামলা করে বসে। এই দুই শক্তির মোকাবিলা করতে গিয়ে ইরান ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়। তবে, আশ্চর্যজনকভাবে ইসরায়েলেরও নজিরবিহীন ক্ষতি হয়। মার্কিন ও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বারবার এই ক্ষতির কথা অস্বীকার করলেও, সম্প্রতি বেশ কিছু তথ্যপ্রমাণ সামনে এসেছে যা প্রমাণ করে যে, ইসরায়েল প্রকৃতপক্ষে ইরানের কাছে 'স্মরণকালের সবচেয়ে বড় মার' খেয়েছে।
শনিবার খোদ যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকদের পরিচালিত স্যাটেলাইট তথ্য বিশ্লেষণের বরাত দিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেছে দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, একটি বৃহৎ বিমানঘাঁটিসহ অন্তত পাঁচটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে সফল হামলা চালিয়েছিল ইরান, এতদিন পর্যন্ত যা লুকানোর চেষ্টা করে এসেছে ইসরায়েল।
টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন অনুসারে, ইসরায়েলি এবং মার্কিন বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইরানের প্রায় ৮৪ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে। তবে, ১২ দিনের যুদ্ধের ফলে ইরান ৪০টিরও বেশি ইসরায়েলি অবকাঠামোতে সফলভাবে সরাসরি আঘাত করেছে।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশেষ করে ইরানের ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র উত্তর, দক্ষিণ এবং মধ্য ইসরায়েলের পাঁচটি লক্ষ্যবস্তুতে ‘বিশাল’ আঘাত হেনেছে, যার মধ্যে একটি গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ কেন্দ্র এবং একটি সরবরাহ ঘাঁটি রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন ভোরে ইরানে ভয়াবহ বিমান হামলা চলিয়ে আগ্রাসন অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। তবে, ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে জবাব দেয় ইরান। এরপর থেকে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চলতে দুদেশের মধ্যে।
সংঘাতের ১০ম দিনে ২২ জুন সকালে মার্কিন ভারী বোমারু বিমানগুলো তিনটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় আক্রমণ করে সংঘর্ষে ঢুকে পড়ে। পরের দিন সন্ধ্যায় কাতারে অবস্থিত মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম মার্কিন সামরিক বিমানঘাঁটি আল উদেইদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় তেহরান।
পরবর্তীতে, ২৪ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ইসরায়েল এবং ইরান সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে, তারা মার্কিন প্রস্তাব গ্রহণ করেছে এবং ঘোষণা করে, তারা ইরানের বিরুদ্ধে তাদের সমস্ত উদ্দেশ্য সম্পন্ন করেছে। পরিবর্তে তেহরান বলেছে, তারা একতরফাভাবে আগ্রাসন বন্ধ করতে বাধ্য করে তেল আবিবের ওপর বিজয় অর্জন করেছে। ২৪ জুন থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে।
Comments