Image description

তীব্র সংঘাতময় ১২ দিন শেষে অবশেষে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলছে। এই সংঘাতের মূল কারণ ছিল ইরানের পরমাণু উন্নয়ন কর্মসূচি। মূলত, ইরানের পরমাণু উন্নয়ন কর্মসূচি বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ইসরায়েল ইরানের ওপর ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। 

এরপর ইরানও পাল্টা জবাব দিতে শুরু করলে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়। একপর্যায়ে, ইসরায়েলের সঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় যোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্র, যা সংঘাতকে আরও তীব্র করে তোলে। এই যুদ্ধবিরতি কতদিন স্থায়ী হবে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে জল্পনা-কল্পনা চলছে। তবে আপাতত এই সাময়িক শান্তি উভয় পক্ষের জন্যই স্বস্তি নিয়ে এসেছে।

টানা ১২ দিনের এ সংঘাত চলাকালীন জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা— আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট ইরান। এ অবস্থায় সংস্থাটির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। 

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি ঘোষণা করেছেন, আর ইরানে ঢুকতে দেওয়া হবে না জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসিকে। একইসঙ্গে ইরানি পরমাণু স্থাপনাগুলোতে নজরদারি ক্যামেরা বসাতেও দেওয়া হবে না সংস্থাটিকে। 

রোববার ইরানের সরকারি বার্তাসংস্থা আইআরএনএ-এর বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

এই সিদ্ধান্ত আসে এমন এক সময় এলো, যখন ইরান ও আইএইএ-এর মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। বিশেষ করে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষিতে নজরদারি ও স্বচ্ছতা নিয়ে তীব্র মতবিরোধ তৈরি হয়েছে।

অবশ্য মাত্র কয়েকদিন আগেই ইরানের পার্লামেন্ট এক আইন পাস করেছে, যেখানে আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর পেছনে রয়েছে গত ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। ওই দিন ইরানের সামরিক, পারমাণবিক ও বেসামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর ভয়াবহ হামলা চালায় ইসরায়েল। ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এতে কমপক্ষে ৬০৬ জন নিহত এবং ৫ হাজার ৩৩২ জন আহত হয়েছেন।

জবাবে ইরানও ইসরায়েলের ওপর মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালায়। হিব্রু ইউনিভার্সিটি অব জেরুজালেমের দেওয়া তথ্যমতে, এতে কমপক্ষে ২৯ জন নিহত এবং ৩ হাজার ৪০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।

শেষ পর্যন্ত গত ২৪ জুন থেকে দুই দেশের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।