Image description

টানা সপ্তম দিনের মতো ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে। এবার ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ভেদ করে কয়েকটি স্থানে আঘাত হেনে ব্যাপক ক্ষতি করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যাও কমে গেছে, যা থেকে ধারণা করা যায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের সামরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিষয়টি মাথায় রেখে ইসরায়েল সরকার যুদ্ধের কারণে দেওয়া কিছু বিধিনিষেধও শিথিল করেছে। তবে বৃহস্পতিবার সকালের হামলা প্রমাণ করেছে, ইরানের এখনও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে হামলা চালানোর ক্ষমতা আছে।

বিবিসির জেরুজালেম সংবাদদাতা হুগো বুশেগার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের টার্গেটের মধ্যে পড়েছে দক্ষিণের বিরশেবা শহরের সোরোকা মেডিক্যাল সেন্টার, তেল আবিবের কাছের হোলোন শহর, আর রামাতগন শহর।

ইরান বলেছে, বিরশেবায় তাদের আসল লক্ষ্য ছিল হাসপাতালের পাশে থাকা সামরিক স্থাপনা। তবে ইসরায়েলের উপ–পররাষ্ট্রমন্ত্রী শ্যারেন হাসকেল অভিযোগ করেছেন, ইরান ইচ্ছে করে সোরোকা হাসপাতালকে টার্গেট করেছে। অন্য যেসব শহরে ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে, সেখানে কী টার্গেট ছিল তা পরিষ্কার নয়।

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা, জ্বালানিকেন্দ্র, বিমানবন্দর, সরকারি ভবন এমনকি আবাসিক এলাকাতেও বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। ইরান বলছে, এসব কিছু তাদের বিরুদ্ধে আগ্রাসন, সুতরাং তারা আত্মরক্ষার অধিকার রাখে।

এদিকে বিবিসির আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলে ইরানের সাম্প্রতিক হামলায় ৬৫ জন আহত হয়েছে। ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জানিয়েছে, তাদের চিকিৎসা চলছে।

এমডিএ’র তথ্য মতে, ৪২ জন সামান্য আঘাত পেয়েছেন। বোমা হামলার আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় ১৮ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রয়েছে ৮০ বছরের একজন পুরুষ। এছাড়া ৭০ বছরের দুই নারী রয়েছেন যাদের অবস্থা ‘গুরুতর’।

বৃহস্পতিবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর দক্ষিণ ইসরায়েলের বেয়ারশেবার সোরোকা হাসপাতালের একটি ভবন থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সময় দক্ষিণ ইসরায়েলের একটি হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।  এমডিএ জানিয়েছে, হাসপাতালের চিকিৎসকরা এখনও সেখানে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে ইসরায়েলের বিরশেভা শহরের সোরোকা হাসপাতালের পাশে একটি সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করেই ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম। সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ- এর মতে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) একটি ‘কমান্ড ও গোয়েন্দা সদরদপ্তর (আইডিএফ-সিফোরআই)’ এবং গাভ-ইয়াম টেকনোলজি পার্কে অবস্থিত একটি সেনা গোয়েন্দা ক্যাম্পের ওপর এই হামলা চালানো হয়েছে। হাসপাতাল মূলত বিস্ফোরণের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। আসল লক্ষ্য ছিল সামরিক অবকাঠামো, আর সেটাই সরাসরি ও নির্ভুলভাবে আঘাত করা হয়েছে।

গাভ-ইয়াম নেগেভ টেকনোলজি পার্কের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এটি বেন গুরিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এবং আইডিএফ-সিফোরআই ব্রাঞ্চ ক্যাম্পাসের পাশে অবস্থিত।

ইসরায়েলি গণমাধ্যম আগে জানিয়েছিল, এখানে আইডিএফ-এর একটি ক্যাম্পাস নির্মাণাধীন রয়েছে।