Image description

ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (জিআরএসই)-এর সঙ্গে করা ২১ মিলিয়ন ডলারের একটি সামুদ্রিক টাগবোট নির্মাণ চুক্তি বাতিল করেছে বাংলাদেশ সরকার। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে স্বাক্ষরিত এই চুক্তি বাতিলের তথ্য সম্প্রতি ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি।

এই চুক্তিটি ছিল ভারত সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিরক্ষা খাতে বাংলাদেশকে দেওয়া ৫০ কোটি ডলারের ঋণরেখার অধীনে প্রথম বড় প্রকল্প। ৮০০ টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন একটি সমুদ্রগামী টাগবোট নির্মাণের লক্ষ্যেই এই চুক্তি হয়েছিল। সংশ্লিষ্টদের মতে, এই চুক্তি বাতিলের ফলে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হতে পারে।

এই চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এলো, যখন গত সপ্তাহে ভারত বাংলাদেশের তৈরি পোশাক আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করে। এছাড়া, চলতি মে মাসেই ভারত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ১১টি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি ভোক্তা পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধ করে, যা প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানিকে প্রভাবিত করতে পারে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ৯৩ শতাংশ তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থলবন্দর দিয়ে হয়ে থাকে।

এর আগে এপ্রিল মাসে ভারত বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের জন্য ভারতীয় বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে ট্রানশিপমেন্টের সুবিধাও বাতিল করে। এর পালটা পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ ১৩ এপ্রিল থেকে ভারতের সুতা রপ্তানি স্থলবন্দর দিয়ে বন্ধ করে দেয়।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ছিল ভারতের বৃহত্তম উপমহাদেশীয় বাণিজ্য অংশীদার। ওই অর্থবছরে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল ১৮০ কোটি ডলারের বিপরীতে ভারতের রপ্তানি ছিল ১ হাজার ১০৬ কোটি ডলার। এই চুক্তি বাতিল এবং ধারাবাহিক বাণিজ্যিক কড়াকড়ি দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন করে টানাপোড়েন সৃষ্টি করেছে, যা ভবিষ্যতে আরও গভীর হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।


সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস