Image description

মেসোপটেমীয় সভ্যতা প্রাচীন বিশ্বের এক অপার বিস্ময়। মেসোপটেমিয়া শব্দটি এসেছে মূলত গ্রিকদের কাছ থেকে। প্রাচীন গ্রিক ভাষায় ‘সবংড়’ শব্দের অর্থ ছিল ‘মধ্য’ বা ‘মধ্যে’ আর শব্দের অর্থ ‘নদী’। ‘Mesopotamia’ শব্দের উৎপত্তি, যার অর্থ হলো ‘নদীর মধ্যে অবস্থিত’। ইউফ্রেতিস ও টাইগ্রিস নামক বৃহৎ দুই নদীর মধ্যবর্তী উর্বর উপত্যকাই ছিল তৎকালীন মেসোপটেমিয়া। প্রাচীনকালে একে বলা হতো ‘দ্বি-নদমধ্যা দেশ’। 

খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ৩,০০০ অব্দের দিকে সুমেরীয়রা পুরো মেসোপটেমিয়ায় তাদের প্রভাব বিস্তার করে নেয়। ইরিদু, নিপ্পুর, লাগাশ, উড়–ক, কিশ শহরগুলো নিয়ে তাদের রাজ্য গঠিত হলেও সেখানে ছিল না কোনো কেন্দ্রীয় সরকার ব্যবস্থা। সকল শহর সমান ক্ষমতা ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করত। তৎকালীন নগরায়ণ ও শহর ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত উড়ুক শহর। ৬,০০০ বর্গমিটার জায়গা নিয়ে বিস্তৃত উড়ুক শহর ছিল তৎকালীন মেসোপটেমিয়া তথা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শহর। শুধু আয়তনেই নয়, এর জনসংখ্যাও ছিল প্রায় ৬০,০০০-৮০,০০০ এর কাছাকাছি। কৃষিপণ্য রপ্তানি করেই তারা নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করেছিল। প্রাচীন মহাকাব্য গিলগামেশ ও বাইবেলে এ শহরের উল্লেখ পাওয়া যায়। 

মেসোপটেমিয়ার সাথে এ প্রাচীন শহরটিও সভ্যতার অংশ হয়ে রয়েছে। শ্রেণিসমাজের উদ্ভব ঘটার পরপরই মেসোপটেমিয়ায় রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন হয়। প্রায় প্রত্যেক শহরই ছিল স্বয়ংসম্পূর্ণ রাষ্ট্র। সেখানে প্রহরী, আমলা, জল্লাদ প্রভৃতি নিযুক্ত ছিল। তারা নিরীহ জনগণের ওপর অত্যাচার চালাত। নগর-রাষ্ট্রের রাজারা একে অন্যের সাথে যুদ্ধ-বিগ্রহে মত্ত থাকত। যুদ্ধে জয়ী হলে বিজিত নগরী দখল করে নিত বা ধ্বংস করে দিত। আর শহরের বাসিন্দাদের যুদ্ধবন্দি হিসেবে ধরে নিয়ে বানানো হতো দাস।


মানবকণ্ঠ/এফআই