Image description

অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি নারীরা শ্রমবাজার থেকে ছিটকে পড়ছেন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) দেশে প্রায় ২১ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। এর মধ্যে ১৮ লাখই নারী। অর্থাৎ চাকরি হারানো মানুষের ৮৫ শতাংশের বেশি নারী, যা শ্রমবাজারে বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

গত মে মাসে প্রকাশিত ‘জেন্ডারভিত্তিক দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ইউএন উইমেনের সহযোগিতায় প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, কর্মসংস্থানের এই সংকোচন শুধু পরিবারগুলোর আয়কেই প্রভাবিত করছে না, বরং দারিদ্র্য, বৈষম্য ও সামাজিক ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাত ও সেবা খাতে নারীদের অংশগ্রহণ কমে যাওয়া সামগ্রিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। 

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে নারী শ্রমশক্তি অংশগ্রহণে বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে। নেপালে এ হার প্রায় ৫০ শতাংশ, ভুটানে ৫৮, কিন্তু বাংলাদেশে মাত্র ৩৭ শতাংশ। কর্মসংস্থানে নারীর অংশগ্রহণ কমে গেলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনও ঝুঁকিতে পড়বে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘তৈরি পোশাক খাত, কৃষি, সেবা এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা পর্যায়ে নারীদের অংশগ্রহণ দেশের সামগ্রিক উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে আসছে। তবে সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেশের শ্রমবাজারে নারীরা যে ভয়াবহ সংকটে পড়েছেন, তা শুধু উদ্বেগজনক নয়, বরং শ্রমবাজারে বিদ্যমান লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের নগ্ন প্রকাশ।’