
হবিগঞ্জের মাধবপুরে সরকারের সরকারিভাবে জব জব্দকৃত ৬০ লক্ষ টাকার বালু চুরি হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কার্যাদেশ না হওয়া সত্ত্বেও তৎকালীন একটি চক্র প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দেয়ায় দৈনিক মানবকন্ঠ পত্রিকায় "প্রকৌশলী ও যুবলীগ নেতার যোগসাজশে মাধবপুরে ৬০ লাখ টাকা লোপাট" শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর এলাকায় একটি চঞ্চলের সৃষ্টি করেছে।
তবে মাধবপুরের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ বিন কাসেম বিষয়টি উপজেলা পরিষদের সমন্বয় উত্থাপন করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।
বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকের করা প্রশ্নে এমন আশ্বাস দেন। জাহিদ বিন কাশেম জানান, উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় বালু চুরি তথা রাজস্ব ফাকির বিষয়গুলো উত্থাপিত হবে। এরপর অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। মাধবপুর উপজেলা প্রশাসন কোন চোরদের প্রশ্রয় দেবে না। সে যত বড় শক্তিশালী হোক না কেন।
পূর্বে প্রকাশিত সংবাদের বিষয় ছিল:
জানা যায়, ২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের অনুমোদনে সোনাই নদীর পাড় থেকে জব্দ হওয়া প্রায় এক লাখ ঘনফুট সিলিকা বালি নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। পরে ৯ মার্চ উপজেলা প্রকৌশলী শাহ আলমকে আহ্বায়ক করে নিলাম কমিটি গঠন করা হয়। ওই নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে স্থানীয় যুবলীগ নেতা হেলাল মিয়া মোট ৮৩ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকায় একটি প্যাকেজে বালি কেনার সুযোগ পান। নিয়ম অনুযায়ী পুরো অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার শর্ত থাকলেও তিনি মাত্র ২৩ লাখ টাকা জমা দেন। বাকি ৬০ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা আর জমা দেওয়া হয়নি।তবুও হেলাল মিয়া নিলামকৃত বালি উত্তোলন শুরু করেন এবং নির্ধারিত সময়সীমার বাইরে দীর্ঘদিন ধরে উত্তোলন ও বিক্রি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় উপজেলার তৎকালীন ইউএনও একেএম ফয়সাল ও এলজিইডি প্রকৌশলী শাহ আলমের যোগসাজশ করেছেন বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন।
এ ঘটনায় আত্মসাতের প্রমাণ গোপন করতে নিলামের ফাইলও গায়েব করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। চলতি বছরের ১০ সেপ্টেম্বর তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করলে এলজিইডি দপ্তর জানায়, নিলামের নথি তাদের কাছে নেই। তবে তৎকালীন উপজেলা প্রকৌশলী শাহ আলম দাবি করেন, দায়িত্ব ছাড়ার সময় তিনি যাবতীয় কাগজপত্র অফিসেই রেখে গেছেন।
হবিগঞ্জ দুদকের উপ-পরিচালক এরশাদ আলী বলেন, “এই দুর্নীতির ঘটনা অত্যন্ত সুকৌশলে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শুরু করার জন্য আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি চেয়েছি।তবে উপজেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে ইউএনও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারেন।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগ নেতা হেলাল মিয়ার মোবাইল ফোন নাম্বারটি বন্ধ থাকায় কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
Comments