বেনাপোলে মেয়াদোত্তীর্ণ সিঅ্যান্ডএফ এসোসিয়েশনের নেতৃত্বের বৈধতা নিয়ে তোলপাড়

বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বেনাপোলে মেয়াদ উত্তীর্ণ সিঅ্যান্ডএফ এসোসিয়েশনের নেতৃত্বের বৈধতা নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। বর্তমান কার্যকরী কমিটির মেয়াদ গত ৩০ মে শেষ হলেও নির্বাচান ঘোষণা না করায় সদস্যদের মধ্যে চলছে সমালোচনার ঝড়। ফেসবুকে তারা নানাভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন।
দেশের আমদানি রপ্তানি বানিজ্যের অন্যতম সোস্যাল গ্রুপ “সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট বাংলাদেশ” নামের ফেসবুক গ্রুপে পন্ডিতের পাঠশালা নামক ফেসবুক পোস্টে লেখেন,“বেনাপোলে সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের নির্বাচনের ডেট ওভার হয়ে গেছে” এখন যারা আছেন তারা কি বৈধ নাকি অবৈধ?।
এস.ইউ. আহমেদ অ্যান্ড সন্স লিমিটেডের মালিক NM MOHIUDDIN বেনাপোলে সিঅ্যান্ডএফ এসোসিয়েশনের ভোটার তিনি কমেন্ট করেন, “কথা বললেই তো বলবে বড় সাহেবের ব্যবহার খারাপ বেনাপোল অ্যাসোসিয়েশন হচ্ছে জামাতের মত কর্মী যে নেতা সে ভোটার ডটকম মন চায় জিন্দেগি যারা ক্ষমতায় আছে তাদের সাথে লড়ার কেউ নাই আছে একটা আমাদের মফিজুল ইসলাম সজন ভাই।" এছাড়া সবাই তো পকেট ভারি হলেই তাই তাই তার প্রমাণ বিশেষ করে ঢাকা কাস্টম এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এর নির্বাচন আসলেই তাদের অবস্থা বুঝা যায় বাপ বেটা ভাই ভাই টাকা ছাড়া কোন কথাই নাই। তারপরও বর্তমানের সাধারণ সম্পাদক আমার প্রিয় লতা ভাইকে বলবো আপনি তো জনপ্রিয় একজন নেতা, তাই গণতন্ত্র ধারা অব্যাহত রাখার জন্য নির্বাচনের আয়োজন করুন, ভোটারদের ইজ্জত করুন, গর্বিত হোক সি এন্ড এফ পরিবার।
সেখানে কমেন্টের জবাব দেন বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক MA TAHER BHAROT লেখেন, মহিউদ্দিন ভাই, বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন নির্বাচনের কথা ভাবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। তবে, আপনি যার নাম উল্লেখ করেছেন তিনি বেনাপোলের এক নম্বর বাটপার টাইপের, তিনি সকল জটিলতার মূলে (সার্কাসের জুকার চেনেন)। তিনি নিজের স্বার্থের বাইরে কিছু ভাবেন না। এজন্যই তিনি প্যানেল দিতে পারছেন না। আপনি তাকে প্যানেল দিতে বলুন। অবশ্যই, বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন হবে। আমি দায়িত্বশীলতার সাথে বলছি।
এসোসিয়েশনের ভোটার “বাংলাদেশ কার্গো সার্ভিসের মালিক MD DULAL HOSSAIN কমেন্ট করেন, “আমার জানামতে গত এজিএম এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সময় বাড়িয়ে নেয়া হয়েছিল। সেই কারণে যারা আছেন তারা সবাই বৈধ। তবে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার জন্য নির্বাচনের বিকল্প কিছু নেই। আসা করি নেতৃবৃন্দ সাধারণ সদস্যদের পালস বুঝবেন ও নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন।”
এর আগে অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংগঠনটির সদস্য বনি ট্রেডিং কর্পোরেশনের সত্ত্বাধিকারী নাজমা আক্তার তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার অন্তত ৪৫ দিন আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি কেন।
তিনি আরো লেখেন, কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণের সময় পেরিয়েছে ১৫৬ দিন আর ৪৫ দিন পূর্বে নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত হওয়ার কথা যা বিলম্ব হয়েছে। এই দুই মিলিয়ে মোট ২০১ দিনের বিলম্ব যা সম্পূর্ণ অনৈতিক এবং অবৈধ অবস্থান বলে তার দাবি।
কামরুজ্জামান সোহাগ তার কমেন্টে লিখেছেন, এজিএম এর মাধ্যমে ডেট বাড়িয়ে নিয়ে বৈধ হিসাবে পরিচয় দেয়। প্রেসিডেন্ট অসুস্থ, সেক্রেটারি ঢাকায় অন্যরা লারেলাপ্পা। একটা মেরুদন্ডহীন এসোসিয়েশন।
SAIFUL ISLAM কমেন্টে লেখেন, অবশ্যই অবৈধ, সভাপতি কেন নির্বাচনের আয়োজন করছেন না, নাকি ক্ষমতা ছাড়তে মন চাইছে না, অনেক তো হলো, জরুরী নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।
KAZI FARHAD কমেন্টে লেখেন, গনতন্ত্রের ধারা বজায় রাখতে নির্বাচনের বিকল্প নেই। নির্বাচন দিয়ে জনপ্রিয়তা যাচাই করুন আর গনতন্ত্র রক্ষা করুন।
এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতার কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে জানান, হজ্বও ঈদসহ সভাপতির অসু¯’তার কারনে নির্বাচন তারিখ ঘোষণা করতে পারিনি। এবিষয়ে এজিএম করে কমিটির সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। তবে কত দিন সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে তা তিনি নিদিৃষ্ট করে বলেননি।
একাধিক সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী জানান, বর্তমান এসোসিয়েশনের এর কার্যকারী কমিটি সদস্যদের পক্ষে কোন সমস্যার সমাধান দেন না। সভাপতি দীর্ঘদিন অসুস্থ আর সাধারণ সম্পাদক ঢাকায় বসবাস করেন। কাস্টমসে ডকুমেন্টে কোন সমস্যায় পতিত হলে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কথা মতই চলতে হচ্ছে।
তারা আরও জানান,সংগঠনের সভাপতি অসুস্থ হলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সহ-সভাপতি দিয়েও নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা যায়। নির্বাচন বিলম্ব বিষয়ে সংগঠনটির একাধিক সদস্যের আপত্তি থাকলেও আমলে নিচ্ছেনা চলমান কার্যকারী পরিষদ বলে জানা গেছে।
সংগঠনটির সাবেক সভাপতি ও সজন এন্টারপ্রাইজের সত্তাধিকারী মফিজুর রহমান সজন বলেন, চলমান পরিষদের মেয়াদকাল শেষ হওয়ায় সংগঠনটির সাধারন সদস্যদের কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃক ব্যবসায়িক সৃষ্ট জটিলতার কোন সমাধান দিতে পারছেনা অ্যাসোসিয়েশান নেতৃবৃন্দ। এর ফলে সদস্যরা সেবা বঞ্চিত হচ্ছে এটা খুবই দুঃখজনক ও হতাশার। সৃষ্ট জটিলতা এড়িয়ে তিনি দ্রুত এসোসিয়েশান নির্বাচন দাবী করেছেন।
জানা যায়, বেনাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকারী পরিষদের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০২২ সালে ৩০ মে। এ হিসেবে তিন বছর মেয়াদ শেষ হয়েছে চলতি বছরের ৩০ মে। বিধি অনুযায়ী মেয়াদ শেষের ৪৫ দিন আগে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে তৎপরতা না দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছেন এসোসিয়েশনের সদস্যরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে তাদের বিরুপ প্রতিক্রিয়া।
Comments