Image description

সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা ও কাবিটা) প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সিসিকরণে নিম্নমানের সামগ্রী ও পুরাতন ইট ব্যবহার করায় মাস না পেরুতেই তা ভেঙে যাওয়ায় ঝুকি নিয়ে চলছে যান চলাচল এবং দায়সাড়া মাটির কাজ করেই বিল উত্তোলন হওয়ায় উত্তাল স্থানীয় জনমত।

অপরদিকে সচেতন মহলের প্রশ্ন নামমাত্র কাজ করে কিভাবে বিল উঠলো। তবে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, এই অনিয়মের সঙ্গে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত দেখভাল কর্মচারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতা রয়েছে বলে।

এদিকে প্রকল্পের পরিপত্র অনুযায়ী, কাজ শুরুর আগে বাধ্যতামূলক সংশ্লিষ্ট প্রকল্প, কমিটির নাম ও বরাদ্দের পরিমাণ উল্লেখ করে সাইনবোর্ড স্থাপন করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও বাস্তবে কোনো সাইনবোর্ড দেখা যায়নি।

তথ্যানুন্ধানে জানা যায়, কৈজুরী ২ নং ওয়ার্ডে ২৪-২৫ অর্থ বছরের ১ম-২য় পর্যায়ের সাধারণ প্রকল্প কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্পে হাটপাচিল ওয়াপদা বাঁধ হতে ঈদগাঁ মাঠ পর্যন্ত রাস্তা নির্মানের জন্য ১০ মেঃ টন গম বরাদ্ধ দেওয়া হয় যার বাজার মূল্য প্রায় ৪ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। 

প্রকল্পটিতে সরেজমিনে গিয়ে রাস্তাটির নামমাত্র কাজ করার কিছু অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এব্যপারে নদী ভাঙন কবলিত এলাকা হওয়ায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভীত এলাকাবাসী জানান, ১০ জন শ্রমিক ৮ দিন রাস্তার ধসে যাওয়া স্থানে মাটি ফেলেছে। এতে রাস্তায় ব্যয় হয়েছে সর্বোচ্চ ৪০/৫০ হাজার টাকা, নেই কোনো সাইনবোর্ড।

অপরদিকে, উক্ত ওয়ার্ডেই ২৪-২৫ অর্থ বছরের ৩য় পর্যায়ের সাধারণ প্রকল্প কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পে জয়পুর হাসেনের বাড়ি হতে জয়পুর ঈদগাহ মাঠ ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তা সংষ্কার ও সিসিকরণে জন্য ৬ লক্ষ ৩০ হাজার ৯১৬ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। উক্ত প্রকল্পে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুধু মাত্র ব্রিজের দুই পাশের এপ্রোসে সিসিকরণ করেছে তাও নিম্নমানের সামগ্রী ও পুরাতন ইট ব্যবহার করায় মাস না পেরুতেই তা ভেঙে গেছে। 

উক্ত প্রকল্পের নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাটি কজের এক শ্রমিক জানান, আমরা ২৮-৩০ জন শ্রমিক ১৫ দিন মাটির ফেলানোর কাজ করেছি। তবে এক অজানা ভয়ে এলাকাবাসী কেউই মুখ খোলেনি কাজের ব্যাপারে। এতে উক্ত কাজে সর্বোচ্চ দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকার কাজ করে বাদবাকি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের সভাপতি ও ইউপি সচিব এবং প্রকল্প ব্যাস্তবায়ন কর্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত দেখভাল কর্মচারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতা এ অনিয়ম ও দুর্নীতির হয়েছে। আর এদিকে কোন প্রকল্পের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে প্রতিবেদককে জানান উক্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন। 

এদিকে উক্ত দুই প্রকল্পের সভাপতি কৈজুরী ইউনিয়নের ২নং ইউপি সদস্য শাজাহান আলী বেপারী। তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রিলিপের অল্প সংখ্যক কার্ড পাই, এতে সবাইকে তো আর দিতে পারি না তাই আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছে তারা। 

তিনি আরও বলেন, ইউএনও আমার কাজ দেখে সংতুষ্ট হয়ে সে বিল প্রদান করেছে। আপনি ইউএনও সাথে কথা বলেন।

এব্যপারে উক্ত ইউনিয়নের সচিব মানিক খান বলেন, কাজের কোন অনিয়ম হয়নি। প্রতিটা কাজ ইউএনও দেখে তার পর বিল প্রদান করেছেন। আপনার বিশ্বাস না হয় ইউএনও কাছে শুনতে পারেন।

তবে এ বিষয়ে উপজেলা নির্র্বাহী অফিসার মোঃ কামরুজ্জামান জানান, আমি এ দুই প্রকল্প পরিদর্শন করিনি। যারা আমার নামে মিথ্যা বলেছে এবং এ দুই প্রকল্পের প্রত্যায়ন দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

অপরদিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল কালাম আজাদ বলেন, ঐ সময় আমি চিকিৎসাধীন ছিলাম তাই প্রকল্প পরিদর্শন করতে পারি নাই। এই দুইটি প্রকল্পের কাজ পুনঃরায় করার তাগিদ দেওয়া হবে। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।