বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে রোগীদের দুর্ভোগ ও অনিয়মের প্রতিবাদে মানববন্ধন

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসাপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের জিম্মি করে টাকা আদায় সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসুচি পালন করেছে ভুক্তভোগীরা। সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টায় হাসপাতাল চত্বরে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসুচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারীরা বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদেরকে জরুরি বিভাগ থেকে টাকা গুনতে হয়। রোগী বহনের ট্রলি বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রনে। তাদেরকে টাকা না দিলে রোগী ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয় না। রোগীর ভর্তির পর থেকে শুরু হয় দালালদের তৎপরতা,খাবারের মান খারাপ, টয়লেট বাথরুম ঠিকমত পরিস্কার করা হয় না। ফলে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকসাবাড়ি গ্রাম থেকে আসা মানববন্ধনে অংশ নেন নুরুন্নবী নামের অটো রিকশা চালক। তিনি বলেন, গত ১ সেপ্টেম্বর আমার গর্ভবতী স্ত্রী শারমিন খাতুনকে এই হাসপাতালে ভর্তি করান। টাকা খরচ করতে না পারায় আমার স্ত্রী ভাল চিকিৎসা পাননি। সময়মত অপারেশন না করায় পেটেই বাচ্চা মারা যায়। কাহালু সরকারি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র কেএম নুরুল্লাহ বলেন,আমি একজন জুলাই যোদ্ধা। জুলাই আন্দোলনে আহত হয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা পাইনি। হাসিনা সরকারের পতনের পর আশা করছিলাম হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসবে। কিন্তু বাস্তবে দেখছি পুর্বের সেই সিন্ডিকেট বহাল আছে। একারনে আমরা মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করতে বাধ্য হয়েছি।
বগুড়া শহরের পুরান বগুড়া এলাকার বাসিন্দা জামায়াত নেতা আবুল কাশেম বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে এখনও আওয়ামী সিন্ডিকেট এসব অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িত। তিনি বলেন আওয়ামী দোসর জাহিদুর রহমান রিপু হাসপাতালের ঠিকাদারী কাজ নিয়ন্ত্রন করে। তিনি এসব সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত রয়েছেন। মানববন্ধন কর্মসুচিতে শেষে হাসপাতাল চত্বর বেলা ১ টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসুচি পালন করা হয়।
ঠিকাদার জাহিদুর রহমান বলেন, আমি ঠিকাদারি কাজ করি। অনিয়ম এবং রোগীদের দুর্ভোগের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই। আমি কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী না। ব্যবসার কারনে সব দলের নেতাদের সাথে সম্পর্ক রাখতে হয়েছে।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মহসিন আলী বলেন, ৫০০ শয্যার হাসপাতালে সব সময় দুই হাজার রোগী চিকিৎসাধীন থাকে। এর বাহিরে প্রত্যেক রোগীর জন্য গড়ে আরো চারজন করে মানুষ হাসপাতালে অবস্থান করে। এত রোগীর চিকিৎসা একসাথে দেয়ার মত জনবল আমাদের নেই। আমাদের কষ্ট হলেও চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, রোগীদের খাবারের জন্য মাথাপিছু বরাদ্দ ১৭৫ টাকা। বর্তমান বাজারে এই টাকায় তিনবেলা একজন খাওয়ানো কষ্টকর। তিনি বলেন, রাতারাতি সবকিছুতে পরিবর্তন আনা সম্ভব না। আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি রোগীর সেবা দেয়ার জন্য।
Comments