Image description

পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে কামরুজ্জামান (৩৫) নামে এক কৃষকের শতাধিক ফলের গাছ ও আমন ধানের বীজ তলা নষ্ট করে ফেলে উল্টো হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে আবুল বাশার (৪৭) এর বিরুদ্ধে। গত (৩১ আগস্ট) দুপুর ২ টার দিকে উপজেলার বালিপাড়া গ্রামের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। 

কামরুজ্জামান বালিপাড়া গ্রামের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আব্দুল খালেক হাওলাদারের ছেলে এবং আবুল বাশার একই গ্রামের মৃত আব্দুর রব এর ছেলে। 

এ ঘটনায় ওই ভুক্তভোগী কৃষক একইদিনে বিচার চেয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইন্দুরকানী থানায় বাদী হয়ে আবুল বাশার, নাসিমা বেগম ও লাভলু হাওলাদারকে বিবাদী করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে নিশ্চিত করেছেন ইন্দুরকানী থানার সাব ইন্সপেক্টর আশিক। 

অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, বালিপাড়া গ্রামের কৃষক কামরুজ্জামান এর ২৬ শতাংশ জমি বিবাদীগণ জোরপূর্বক দখলের একাধিকবার চেষ্টা করলে ওই কৃষক বাঁধা দেয় এবং এ নিয়ে কয়েকবার মিমাংসার চেষ্টা করা হয়। এরই জের ধরে গত রোববার (৩১ আগস্ট) ওই জমিতে কৃষক কামরুজ্জামানের রোপণকৃত ফলসহ সুপাড়ি গাছ ৫০টি, কলা গাছ ২৫টি, পেপে গাছ ১০টি, লেবু গাছ ৮টি, পেয়ারা গাছ ৪টিসহ নারিকেল গাছ, আম গাছ ও কাঠাল গাছ কেটে ফেলে এবং এর দুদিন আগে পাসে থাকা আমন ধানের বীজ তলা নষ্ট করে ফেলা হয়। 

পত্রে আরও জানানো হয়, এর আগে গত বছরের (২৫ ডিসেম্বর) একই জমিতে রোপণকৃত প্রায় দুইশত সবজী গাছ কেটে ফেলেছে আবুল বাশার। এর মধ্যে রয়েছে লাউ গাছ, কুমড়া গাছ, পেপে গাছ, করল্লা গাছ, সিম গাছসহ নানা প্রজাতির শাক ও সবজি গাছ। এছাড়াও একই বছরের জুলাই মাসে অন্য একটি জমিতে লাভলু ও নাছিমা মাটি কেটে দখলে নেয়ার চেষ্টা করা হলে ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর প্রতিবাদে ব্যর্থ হয়। 

ভুক্তভোগী কৃষক কামরুজ্জামান বলেন, আমার বাবা এবং দাদার জমি আবুল বাশার, নাছিমা বেগম ও লাভলু সাত বছর ধরে জোর করে দখল করতে চায়। ওই জমির পরিবর্তে তারা অন্য জায়গা থেকে জমি ভোগ করে। কিন্তু তারপরও আমার জমি দখল করতে তারা কয়েকবার আমার রোপন করা ফলের গাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ফেলেছে। চাষকৃত জমির বীজ তুলে ফেলছে। তারা কাউকে পরোয়া করে না। শালিশ-বৈঠকও মানে না। কান্না জড়িত কন্ঠে কৃষক জানান, আমার মৃত পিতাকে কুরুচি ভাষায় গালি দেয় এবং আমার হাত পা ভেঙে দেয়ার হুমকি প্রদান করে। 

সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসীগণ ভুক্তভোগী ওই কৃষকের পিতাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করায় এবং গাছ কাটার বিষয়ে সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন। 

বালিপাড়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, কামরুজ্জামানের বেশকিছু ফলজ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে এবং বীজ তলা নষ্ট করা হয়েছে। এটা হলো এজমালি সম্পত্তি, এদের একটাই খতিয়ান কিন্তু দাগ অনেক। এর মধ্যে জমির হিস্যা হিসেবে লাভলু জমি বেশি খায়। এর আগেও একবার ওই জমির গাছ কেটেছে। এরা আইন না মেনে নিজের ক্ষমতা বলে এগুলো করছে। অন্যায় ভাবে গাছ কাটা এবং বীজ নষ্ট করা এটা সমাজ বিরোধী কাজ। আমি চাই এ ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার হোক। আইনের বিরুদ্ধে গিয়ে কেহ অপরাধ করে পার পাবে না। 

ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মারুফ হোসেন জানান, গাছ কাটার বিষয়ে একটি লিখিতি অভিযোগ পেয়েছি। দুপক্ষের মধ্যে মিমাংসার চেষ্টা চলছে। মিমাংসা না হলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।