
বিস্ফোরকের অভাবে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অবস্থিত দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল মধ্যপাড়া পাথর খনিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য পাথর উত্তোলন ও উন্নয়ন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে প্রতিদিন সরকারের প্রায় ১ থেকে ১.৫ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) উৎপাদনের দায়িত্ব নেওয়ার পর এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো খনির কার্যক্রম বন্ধ হলো। মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (এমজিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী ডিএম জোবায়েদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ২০১৪ সালে ২২ দিন, ২০১৫ সালে ২ মাস, ২০১৮ সালের জুনে ৭ দিন এবং ২০২২ সালে ১৫ দিন বিস্ফোরক সংকটের কারণে খনি বন্ধ ছিল। বর্তমানে খনির অভ্যন্তরে প্রায় ১২.৫ লাখ মেট্রিক টন পাথর মজুদ আছে।
প্রকৌশলী ডিএম জোবায়েদ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সকাল থেকে খনিটির উৎপাদন ও উন্নয়ন কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে খনির রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চালু আছে। খনির কার্যক্রম সচল রাখতে অতি প্রয়োজনীয় বিস্ফোরক অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট সময় মতো সরবরাহ করতে না পারার কারণেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, পাথর উত্তোলনের জন্য প্রয়োজনীয় মেশিনারি, সরঞ্জাম ও বিস্ফোরক সরবরাহ করার দায়িত্ব এমজিএমসিএল-এর। আর জিটিসি প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার থেকে ৫.৫ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করে।
এমজিএমসিএল-এর উপমহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. সৈয়দ রফিজুল ইসলাম জানান, বছরে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকার অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ও অন্যান্য বিস্ফোরকের প্রয়োজন হয়, যা দরপত্রের মাধ্যমে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। তিনি বলেন, বর্তমানে ভারত থেকে বিস্ফোরকের একটি চালান যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে পৌঁছেছে এবং আশা করা হচ্ছে, দ্রুতই এটি খনিতে এসে পৌঁছালে পুনরায় কার্যক্রম শুরু হবে।
খনি বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ সময় উৎপাদন বন্ধ থাকলে খনির মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই স্থানীয়রা দ্রুত এই সমস্যার সমাধানে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উল্লেখ্য, মধ্যপাড়া পাথর খনিটি ২০০৭ সালের ২৫ মে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করে। ২০১৩ সাল পর্যন্ত এটি লোকসানে চললেও, ২০১৪ সালে জিটিসি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে লাভজনক হয় এবং টানা পাঁচবার লাভ করেছে।
Comments