সীতাকুন্ডে মাছের পোনা উৎপাদনকারী চবির মাসুদ, এখন অনেকের অনুপ্রেরণা

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার বাড়বকুন্ড ইউনিয়নের মধ্যম মাহমুদাবাদ গ্রামের মাহবুবুর আলমের ছেলে আবদুল্লাহ আল মাসুদ গড়ে তোলেন ‘লিসা এগ্রো কমপ্লেক্স’। সফলতা ধরা দেয় এখানেই। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৫ সালে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে আবদুল্লাহ আল মাসুদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে কিছু দিন চাকরির জন্য হন্য হয়ে ঘোরেন। কোথাও কোনো কাজের সুযোগ পাননি। উপায় না পেয়ে মনস্থির করেন পৈতৃক জমিতে কিছু একটা করবেন। সেই চিন্তা থেকে মাছর পোনা উৎপাদন চাষ শুরু করেন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
শুরুতেই একটি পুকুর থেকে এখন ১৫টি পুকুরে মাছ চাষ করছেন তিনি। পাংগাস, মৃগেল, সুবর্ণ রুই, কাতল, তেলাপিয়া, শিং মাছসহ বিলুপ্ত প্রায় দেশি মাছের পোনা চাষ করে তিনি এখন সফল উদ্যোক্তা। মাসুদ ২০১৬ সালে চট্টগ্রাম জেলার সেরা মৎস্য উদ্যোক্তা পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া জেলা উপজেলা পর্যায়েও পেয়েছে বহু পুরস্কার। তাঁর লিসা এগ্রো কমপ্লেক্স এখন মৎস্য খামারিদের নির্ভরতার নাম। পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে অনেকের জন্য। বর্তমানে তার খামারে কাজ করছেন ১১/১৩ জন যুবক। প্রতিদিন চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলা থেকে পোনা কিনতে মৎস্য চাষিররা ভীড় করেন মাসুদের লিসা এগ্রোতে। উদ্যোক্তা মাসুদের সাফল্য এখন অনেকের অনুপ্রেরণা। তার সাফল্য দেখে অনেকে এখন মাছ চাষে ঝুঁকছেন। দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে ছুঁটে আসছেন তার মাছের খামার দেখার জন্য।
আবদুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, পড়াশোনা শেষ করে বেকার বসে না থেকে যুবকরা প্রথমে অল্প জায়গায় গড়ে তুলতে পারেন পোনা উৎপাদন। আমি দেশি প্রজাতির মানসম্মত পোনা সরবরাহের চেষ্টা করছি। স্বল্প সময়ে কম খরচে বেশি লাভ পেতে হলে গুণগত মানের মাছের পোনা উৎপাদনের বিকল্প নেই। এতে করে একদিকে বেকারত্ব থেকে যুবকরা বের হয়ে আসতে পারবে অপরদিকে অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারবেন। মাছের পোনা চাষের মাধ্যমে যুবকেরা শুধু অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন না, বরং দেশের মৎস্য সম্পদ উন্নয়নেও অবদান রাখছেন।
বাড়বকুন্ড বাজারের একটু দক্ষিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পশ্চিম পাশে তার বাড়ী। বাড়ীর সামনে মাছের পোনার ছোট ছোট কয়েকটি পুকুর রয়েছে। পুকুরে পাংগাস, মৃগেল, সুবর্ণ রুই, কাতল, তেলাপিয়া, শিং মাছসহ বিলুপ্ত প্রায় দেশি মাছের পোনা চাষ করেন তিনি। ঔপুকুর গুলোতে তিনি পোনা গুলো বড় করেন। আর এই পোনা গুলো কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেণী ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গা মৎস্য ব্যবসায়ীরা পোনা গুলো ক্রয় করে নিয়ে যায়। তিনি পোনা বিক্রয় পাশাপাশি সীতাকুন্ড উপজেলার তার ১৫থেকে ২০টি পুকুর রয়েছে।এই পুকুর গুলোতেই পোনা বিভিন্ন সাইজের পোনা বড় করে কেজি ধরে বিক্রয় করেন।
সীতাকুন্ড উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, এইখানে প্রান্তিক যারা আছেন এই রকম আমি অনেক শুনেছি একটি এই ‘লিসা এগ্রো কমপ্লেক্স’ পোনা উৎপাদন কামার। মানুষকে পোনা সরবরাহ করে দিয়ে যাচ্ছে। ওনাকে দেখে অনেক প্রান্তিক খামার উদ্যোক্তা আশেপাশে গড়ে ওঠেছে। ওনাকে দেখে আমাদের এই এলাকায় সীতাকুন্ডে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তা গড়ে তুলতে বা তৈরি করতে পারি, আমি বিশ্বাস করি আমরা বাহিরে থেকে আর মাছ আনতে হবে না। আমরা সীতাকুন্ড বাসীকে এইখানে মাছ উৎপাদন করে এইখানে সরবরাহ করতে পারবো। তাহলে মিঠা পানির মাছ অনেক আংশিক চাহিদা পূরন করতে পারবো। বাহিরের থেকে নির্ভরতা অনেক অংশ কমে যাবে। তিনি সবার সহযোগিতা কামা করেন। সবাই উদ্যোক্তা হবেন উদ্বদ্ধ হবেন।
Comments