সৈয়দপুরে জনসাধারনের অবরোধ ও দাবির মুখে মেলায় অবৈধ লটারি বন্ধ ঘোষণা

নীলফামারীর সৈয়দপুরে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলায় র্যাফেল ড্র, লটারি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচির পরে অবশেষে লটারি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকাল ১০ টায় শহরের প্রাণকেন্দ্র পাঁচমাথা মোড়ে সচেতন জনতা, সৈয়দপুরের ব্যানারে ওই অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
কয়েক ঘন্টা চলা ওই অবস্থান কর্মসূচীতে স্থানীয় ইমাম, আলেম সমাজসহ নানা শ্রেণি-পেশার কয়েকশত মানুষ অংশ নেন। এতে ব্যস্ততম সড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে উচ্চ পদস্থ এক কর্মকর্তার নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলেন এবং পরিশেষে মেলায় লটারি ও জুয়া বন্ধের ঘোষনা দেন। লটারি জুয়া বন্ধ ঘোষণার সাথে সাথে অবস্থানকারীরা সড়ক থেকে সরে দাঁড়ান এবং এতে যানচলাচলও স্বাভাবিক হয়।
এর আগে অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন মুফতি মাসউদ, মাওলানা নুরুল হুদা, এডভোকেট গোলাম রব্বানী, মামুনুর রশিদসহ অন্যান্যরা।
বক্তারা বলেন, শহরের গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর সড়কে পাশে একমাসের বেশি সময় ধরে ক্ষুদ্র ও কুটি শিল্প মেলা চলছে। আমরা কখনো মেলার বিপক্ষে ছিলাম না। কিš‘ মেলার নামে যেভাবে অবৈধ লটারি জুয়া চালু করে সৈয়দপুরসহ নীলফামারী, ডোমার, জলঢাকা, চিরিরবন্দর, খানসামা, পাকেরহাট ও পার্বতীপুরে লটারির ওই টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। আর এসব কিনে প্রতারিত ও স্বর্বস্বান্ত হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। সেই সংগে জুয়াকে ঘিরে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বেড়েছে কয়েকগুণ। যার ফলে আতংকিত ও অশান্তি দেখা দিয়েছে নিম্নমধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষের ঘরে ঘরে। সৈয়দপুরসহ এর আশপাশের উপজেলাকে মঙ্গার কবলে ফেলানো হয়েছে আমরা এর বিরোধী। এবং এই জন্য এই অবৈধ লটারি জুয়া বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া ওই মেলার নামে ধর্ম, সমাজ ও সংস্কৃতিকে অবমাননা করে যেভাবে অসামাজিক কর্মকান্ড চলছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। যুব সমাজ নষ্ট হচ্ছে, পরিবার ধ্বংস হচ্ছে।
বক্তারা আরও বলেন, ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধ পরিপন্থী লটারির নামে জুয়া একটি সামাজিক ব্যাধি। মেলার নামে এমন কর্মকান্ড বন্ধ না হলে যুবসমাজ বিপথে যাবে। ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে মেলায় লটারির নামে যে জুয়া চলছে, তা আইনিভাবেই নিষিদ্ধ করা উচিত। এইসব কার্যকলাপ বন্ধ করে একটি সুস্থ, নৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তারা। তা না বলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে হুশিয়ারি দেন তারা।
এর আগে মেলা শুরুর দিকে ২০ টাকা মুল্যের টিকেটে ১০/১২ টি মোটরসাইকেল সহ প্রতিদিন ২০ টাকার টিকেটে ৭ থেকে ১০ ভরি স্বর্ন, পিকাপ সহ মোট ৭১ টি পুরস্কার দেয়ায় অত্র এলাকার মানুষ টিকেট কিনতে হুমরি খেয়ে পড়েন। অনেকে এনজিও থেকে লোন নিয়ে, কেউবা গরু ছাগল বিক্রি করে, আবার কেউবা ভাতের চাল বিক্রি করে ও লটারির টিকেট কিনে পথে বসেছেন।
Comments