
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে অতিভারী বর্ষণের কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় রোপা আমন ধান চাষ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলার খামারকান্দি, খানপুর, মির্জাপুর, সুঘাট ও সিমাবাড়ী ইউনিয়নের বেশিরভাগ ফসলি জমি এখনও পানির নিচে ডুবে রয়েছে, যা কৃষকদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ হাজার ৩২৫ হেক্টর। এখন পর্যন্ত ১১ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে চাষ সম্পন্ন হয়েছে। বীজতলা প্রস্তুতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৩২০ হেক্টর, যেখানে ১ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে বীজতলা প্রস্তুত করা হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬০ হেক্টর বেশি।
কৃষি কর্মকর্তারা জানান, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চারা রোপণের সময় রয়েছে এবং এর মধ্যে পানি নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, খানপুর গ্রামের কৃষক সাজেদুর রহমান বলেন, “জমিতে হাঁটু পানি জমে থাকায় আমন চারা রোপণ করা যাচ্ছে না। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।” একইভাবে, শালফা গ্রামের কৃষক রহিম উদ্দিন জানান, “বীজতলা প্রস্তুত থাকলেও জমি শুকানোর আগে চারা রোপণ সম্ভব নয়। এতে ফলন কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।”
বগুড়া আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া জানান, জুলাই মাসে ২৪২ মিলিমিটার এবং আগস্টে এ পর্যন্ত ৪০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ১৭ আগস্ট পর্যন্ত ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে, যা কৃষকদের উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার আশ্বাস দিয়ে বলেন, “রোপা আমন ধান চাষের জন্য চারার কোনো সংকট নেই। আমাদের পর্যাপ্ত বীজতলা মজুদ রয়েছে, যা আপদকালীন সময়ে ব্যবহার করা যাবে। কৃষকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন।”
Comments