সালথায় দেড়যুগের খেলার মাঠ দখলে নিতে মরিয়া আওয়ামী লীগ নেতারা

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের উত্তর চণ্ডীবরদী গ্রামের একমাত্র ফুটবল খেলার মাঠটি দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা। সম্প্রতি মাঠের মাঝখানে বেড়া দিয়ে দখলের চেষ্টা করা হয়েছে, যা নিয়ে স্থানীয় ক্রীড়াপ্রেমী ও বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত এই মাঠটি আশপাশের প্রায় দশটি গ্রামের শিশু, কিশোর ও তরুণদের খেলাধুলার একমাত্র স্থান।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মুকসুদপুর পৌরসভার বাসিন্দা আব্দুল জলিল সরদারের ছেলে, পৌরসভার সাবেক কমিশনার ও মুকসুদপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাকি সরদার, তার ভাই উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির সরদার, বোন নিলুফা ইয়াসমিন এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পলাশ সরদার এই দখলের সঙ্গে জড়িত।
জানা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধিগ্রহণের পর ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক নির্মাণের কাজ শেষে জমিটি খালি পড়েছিল। গত ১৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে উত্তর চণ্ডীবরদী ও আশপাশের গ্রামের ক্রীড়াপ্রেমীরা এটিকে খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। জমির মূল মালিকরা সরকারের কাছ থেকে অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বুঝে নিয়েছেন।
মাঠে খেলতে আসা খেলোয়াড় ও দর্শকরা জানান, এটিই এলাকার একমাত্র খেলার মাঠ। এটি দখল হলে শিশু-কিশোর ও তরুণরা খারাপ পথে জড়িয়ে পড়তে পারে। তারা মাঠটি দখলমুক্ত করার পাশাপাশি দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। ক্রীড়াপ্রেমী ও স্থানীয়রা সরকার, পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর প্রতি মাঠটি উন্মুক্ত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও তরুণদের এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
অভিযুক্ত নিলুফা ইয়াসমিনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার ভাই জাকির সরদার বলেন, “আমরা ঢাকায় থাকি, আমাদের নামে কোনো জমি নেই। জমির মালিক নিলুফা ইয়াসমিন। তিনি খেলার মাঠ বাদে অবশিষ্ট জমিতে বেড়া দিয়েছিলেন, যা ছেলেপেলেরা উঠিয়ে ফেলেছে।”
সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, “উত্তর চণ্ডীবরদী গ্রামের খেলার মাঠ দখলের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সরকারের স্বার্থ থাকলে মাঠটি দখলমুক্ত করে তরুণদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।”
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান জানান, “মাঠ দখল নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে। জমির মালিকানা দাবিদারদের ডেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে সঠিক কাগজপত্র হাজির করতে বলা হয়েছে। কাগজপত্র যাচাই করে দ্রুত সমাধান করা হবে।”
Comments