Image description

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গাজীপুর জেলা ও মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে গণমিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ই আগস্ট) সকালে গাজীপুর মহানগরের শিববাড়ি মোড়ে এ বিশাল গণমিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গাজীপুর মহানগর জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যাপক মুহা. জামাল উদ্দিন বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল স্বৈরাচার বিরোধী সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক আলোকবর্তিকা। দেশের মানুষ তখন অবিচার ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছে এ দেশ অন্যায় মানে না। আজও আমরা একই স্বৈরতান্ত্রিক আগ্রাসনের মুখে। জামায়াত ইসলামী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ইনসাফ ও ন্যায়ের সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে যাবে।”

সভাপতির বক্তব্যে গাজীপুর জেলা জামায়াতের আমীর, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও গাজীপুর-৩ আসনের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ড. মো. জাহাঙ্গির আলম বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের জাতীয় ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এই দিনে ছাত্র-জনতা এক কাতারে শামিল হয়ে দুর্নীতিবাজ ও স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ গড়ে তুলেছিল, তা আজও আমাদের জন্য প্রেরণার উৎস। বর্তমান দুঃশাসন, গণতন্ত্রহীনতা ও দমন-পীড়নের পরিবেশ আমাদের আবারো সেই চেতনাতেই ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমি এই মঞ্চ থেকে স্পষ্ট করে বলতে চাই—বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কোনো বৈধ ভোটাধিকার, মানবিক অধিকার কিংবা ন্যায়বিচার থেকে পিছু হটবে না। আমাদের সংগ্রাম দেশপ্রেমের, ইনসাফ প্রতিষ্ঠার এবং জাতিকে মুক্তির পথে এগিয়ে নেওয়ার। জনগণের ম্যান্ডেট পেলে আমরা গাজীপুর তথা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও নিরাপত্তার রূপরেখা বাস্তবায়ন করবো। আমরা ক্ষমতার জন্য নয়, মানুষের হক আদায়ের জন্য রাজনীতি করি।”

সমাবেশটি পরিচালনা করেন গাজীপুর মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারী আবু সাঈদ মুহাম্মদ ফারুক।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, গাজীপুর মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর ও গাজীপুর-৫ আসনের এমপি প্রার্থী মো.খায়রুল হাসান, নায়েবে আমীর ও গাজীপুর-২ আসনের এমপি প্রার্থী মো. হোসেন আলী, সাবেক সচিব ও গাজীপুর-১ আসনের এমপি প্রার্থী মো. শাহ আলম বকশী, কেন্দ্রীয় ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি ও গাজীপুর-৪ আসনের এমপি প্রার্থী অধ্যক্ষ মাঃ মোঃ সালাহউদ্দিন আইউবী, জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা মো. সেফাউল হক, জেলা সেক্রেটারী মো. সফিউদ্দিন, সহকারি সেক্রেটারী মো. মুস্তাফিজুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারী আনিসুর রহমান বিশ্বাস, মহানগর সহকারী সেক্রেটারী মো. আজহারুল ইসলাম মোল্লা ও মো. আফজাল হোসাইন, সাবেক শিবির নেতা ড. হাফিজুর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবির মহানগর সভাপতি মো. রেজাউল ইসলাম, জেলা সভাপতি মো. ইয়াসিন আরাফাত, তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসা শাখার সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কালামে হাকীম থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা জাকারিয়া হোসাইন বিন কবির। সমাবেশ চলাকালে তিনবার ইসলামী সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়, যা অংশগ্রহণকারীদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।

সমাবেশ শেষে একটি বিশাল ও সুশৃঙ্খল গণমিছিল শিববাড়ি মোড় থেকে শুরু হয়ে জয়দেবপুর চৌরাস্তা সড়ক প্রদক্ষিণ করে সাডি এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। রাস্তাজুড়ে দিল্লি না ঢাকা? ঢাকা , ঢাকা" আজ আদিনা গোলামী ? আজাদী আজাদী" তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার কে বলেছে কে বলেছে স্বৈরাচার সৈরাচার" বুকের মধ্যে অনেক ঝড় বুক পেতেছি গুলি কর"‘ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করো’, ‘গণতন্ত্র মুক্তি চাই’, ‘জুলাই গণবিদ্রোহ চেতনায় ফিরিয়ে আনো’—এই ধরণের শ্লোগানে মুখরিত ছিল আকাশ বাতাস।

নেতৃবৃন্দ বলেন, “শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলন চালিয়ে যাব।”