
উজানে ভারি বৃষ্টি ও ভারতের উত্তর সিকিমের প্রাকৃতিক লেকে ফাটলের কারণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। তবে সোমবার (৪ আগস্ট) সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করলেও লালমনিরহাটের তীরবর্তী এলাকার মানুষের ভোগান্তি আরও বেড়েছে। প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলের মাঠ ও পুকুর, পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো পরিবার।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, সোমবার সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ৫২.৬ মিটার, যা বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার নিচে। এর আগে রোববার সকাল ৬টায় পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপরে উঠেছিল। পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের সব জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, ভারতের উজানে ভারি বর্ষণের কারণে রোববার রাতে পানি হঠাৎ বেড়ে যায়। ফলে লালমনিরহাটের তীরবর্তী চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার একাধিক এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। প্লাবিত এলাকার মধ্যে রয়েছে পাটগ্রামের দহগ্রাম; হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান, সিন্দুর্না, হলদিবাড়ী, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী; কালীগঞ্জের ভোটমারী, শৈলমারী, নোহালী; আদিতমারীর মহিষখোচা, গোবর্ধন, কালমাটি, বাহাদুরপাড়া এবং সদর উপজেলার ফলিমারী, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়ন।
হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি চরের বাসিন্দা সাজু ইসলাম বলেন, “রোববার থেকে পানি বাড়তে বাড়তে রাতে আমাদের ঘরে ঢুকে পড়েছে। গরু-ছাগল নিয়ে বিপদে আছি। কোনো জনপ্রতিনিধি বা সরকারি লোক খোঁজ নেয়নি। এর স্থায়ী সমাধান কি কখনো হবে না?”
কালীগঞ্জের চর ভোটমারী এলাকার আরিফুল ইসলাম জানান, “সারারাত পানি ঢুকেছে। রান্নাবান্না বন্ধ, বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছে না। রাজনৈতিক নেতারা শুধু তালিকা নিচ্ছেন, কিন্তু ত্রাণ বা সহায়তা কিছুই দিচ্ছেন না।”
পাউবো লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী শুণীল কুমার বলেন, “রোববার তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। এখন পানি কমলেও নিম্নাঞ্চলে সতর্কতা জারি রয়েছে। আগামী দুই-তিন দিন এই পরিস্থিতি থাকতে পারে। তবে পানি আরও বাড়বে কি না, তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।”
Comments