
নির্বাচন কমিশনের বিশেষায়িত কমিটির পক্ষ থেকে বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রাথমিক প্রস্তাবনার প্রতিবাদে স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলো একাট্টা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সর্বদলীয় আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের যে সব জেলায় ভোটার সংখ্যা কম, সেখানে আসন কমানো হচ্ছে। এই যুক্তিতে বাগেরহাটের আসন চারটি থেকে তিনটি করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
তবে এই প্রস্তাবের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই বাগেরহাটের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা যায়। তাদের মতে, জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে বাগেরহাট এখনো চারটি আসন রাখার যোগ্য। বিশেষত সুন্দরবন, ষাটগম্বুজ মসজিদ এবং মোংলা বন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এই জেলার গুরুত্ব আরও বাড়িয়েছে।
আন্দোলনে অংশ নিতে যাওয়া ছাত্রনেতা শেখ আল মামুন বলেন, "তিনটি আসন করা হলে রাজনৈতিক কোন্দল বাড়বে এবং জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা ঠিকমতো সংসদে পৌঁছাবে না।" তিনি আরও বলেন, "আমরা বাগেরহাটবাসী এই সিদ্ধান্ত মেনে নেব না এবং সকলে মিলে প্রতিহত করব।"
জেলা বিএনপির সদস্য খান মনিরুল ইসলাম বলেন, "আসন কমানোর এই সিদ্ধান্ত বাগেরহাটকে আরও বেশি অবহেলিত করবে। আমরা এই সিদ্ধান্ত থেকে দ্রুত সরে আসার দাবি জানাচ্ছি।" তিনি হুঁশিয়ারি দেন, দাবি না মানলে বাগেরহাটের মানুষ আরও কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।
জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করিম এই সিদ্ধান্তকে 'ষড়যন্ত্র' উল্লেখ করে বলেন, "আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সরকারকে এই সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসার দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।"
ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা এই প্রস্তাবকে বাগেরহাটের জন্য একটি অপমানজনক ও বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত হিসেবে আখ্যায়িত করে এই প্রস্তাব বাতিলের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন। এই দাবির পক্ষে আগামী দিনে বিভিন্ন ধরনের সর্বদলীয় প্রতিবাদ ও আন্দোলনের কর্মসূচি নেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বাগেরহাটের সংসদীয় আসনগুলো হলো: বাগেরহাট-১ (চিতলমারী, ফকিরহাট, মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর ও কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (মোংলা ও রামপাল) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা)।
Comments