
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় কয়েক বছর আগেই নৌবন্দর ঘোষণা করা হয়।এরপর থেকে সুরমা নদীর নৌপথে পাহারা দেয় নৌপুলিশ। নৌপুলিশের পাশাপাশি সেখানে থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের নজরদারিও রয়েছে। এত কিছুর পরও বন্ধ হচ্ছে না বালু লুটপাট। প্রতিরাতে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে লাখ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করে কোম্পানীগঞ্জ নিয়ে যাচ্ছে বালু খেকোরা।
নৌপথকে ঘিরে উপজেলার ইসলামপুর ইউপির রাজেন্দ্রপুর মৌজায় ৫টি দাগের ১০৮,৯০ একর আমন রকম ভুমি। এ ভুমির রেকর্ডীয় ও দখলের মালিক ছাতক পৌর শহরের গনক্ষাই গ্রামে আকিক মিয়া চৌধুরীর। তিনি জানান তার মালিকানাধীন জায়গায় পিয়াইন নদীর বালু মহালটি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানার অধিনন্থ এই বালু মহালটির পাশে সুনামগঞ্জ জেলাধীন ছাতক উপজেলায় অবস্থিত পিয়াইন নদী বালু মহালের ইজারাদার আবু সাইদ অভির নেতৃত্বে ক্ষমতার দাপটে একটি সিন্ডিকেট চত্রেুর মাধ্যমে তার স্বত্ব দখলীয় তপসীল ভুমি থেকে অবৈধ ভাবে রাতে ড্রেজার লাখ লাখ টাকার বালু উত্তোলন করছে একটি চক্র।
এ বিষয়ে কৃষকদের হাজার হাজার একর ফসলি ভুমি কেটে বালু ও ভিট বালু উত্তোলনের ঘটনায় ছাতক উপজেলার মিজানুর রহমান চৌধুরী মিজান বাদী হয়ে ইজারাদার সিলেট সিটি কপোরেশন দক্ষিন সুরমা সোবহানি ঘাট ৩১ মৌবন আবাসিক এলাকার আবু সাইদ অভিকে আসামী করে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
গত ২৩ জুলাই সিলেট বিভাগীয় কমিশনার,সিলেট জেলা প্রশাসক, সিলেট জোনের ডিআইজি, নৌপুলিশ সুপার সিলেট অঞ্চল, সিলেট পুলিশ সুপার, কোম্পানীগঞ্জ নিবাহী কর্মকতা, সহকারি ভুমি কমিশনার কোম্পানীগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ছাতক উপজেলা নিবাহী কর্মকতা, সহকারি ভুমি কমিশনার, ছাতক থানা ও নৌপুলিশ ছাতকসহ বিভিন্ন দপ্তরো এ লিখিত আবেদন করেন।
দীর্ঘদিন যাবত রাজেন্দ্রপুর মৌজায় হাজার হাজার একর ফসলি ভুমিতে গভীর রাতে বালু-পাথর উত্তোলন করে চলছে। এসব ফসলি জমি থেকে বালু মহালে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে বাধা দিলে হামলা মামলার ভয় দেখায় ইজারাদার বাহিনীর লোকজন অভিযোগ করেন। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
প্রশাসনের উদ্দ্যোগে অভিযান জরিমানা ও গ্রেপ্তারের হলেও বন্ধ হচ্চেনা এসব বালু লুটপাট। বরং থেমে থেমে ও কৌশলে চলছে বালু উত্তোলন। এমনকি ড্রেজার মেশিনও ব্যবহার করছে বালুখেকোরা। প্রশাসনের পদক্ষেপের কারণে সুরমা,চেলা, সোনাই নদীতে সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে বালু উত্তোলন বন্ধ থাকলেও সোনাই ও নোয়াকুট এলাকার নদীর ড্রেজার মেশিনগুলা বন্ধ হয়নি।
ছাতক উপজেলার নৌপথের মধ্যবর্তী ওই এলাকায় বসানো ড্রেজার মেশিনটি কৌশলেই পরিচালনা করছেন প্রভাবশালীরা। দিনে বন্ধ রেখে রাতে চালু করা হয় সেটি ড্রেজার।
গত ২৭ জুলাই সরেজমিন দেখা যায়, দিনে ড্রেজারটি রাখা হয়েছে কোম্পানীগঞ্জ চাটিবহর ও আমবাড়ি গ্রামের পশ্চিম এলাকার পিয়াইন নদীতে।এসব থেকে নদী এলাকায় গেলে সেটি চোখে পড়ে। ড্রেজারের সঙ্গে রাখা হয়েছে ছোট আরেকটি নৌকাও। যা দিয়ে শ্রমিকরা নদীর পাড়ে উঠে আসে।উপজেলা পিয়াইন ও সুরমা চেলা নদীর ঘাটের পাশে সেটি নোঙর করে রাখা হয়েছে। রাত হলেই তা স্থানান্তর করে রাজেন্দ্রপুর মৌজায় পাশে নিয়ে আসা হয়। সেখানে নদীতে নোঙর ফেলে চলে সারারাত বালু উত্তোলন। এভাবে নানা কৌশলে দীর্ঘদিন ধরে ড্রেজার মেশিনটি চালিয়ে আসছেন স্থানীয় কিছু অসাধু প্রভাবশালীরা।
বর্তমানে প্রতিরাতে ৩০-৪০টি নৌকা ও বাল্ক্কহেড বোঝাই করে বালু বিক্রি করা হচ্ছে। ড্রেজার চলাকালে নদীর তীরে লোকজনকে পাহারা দিতেও দেখা যায়। বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে এলাকার দুটি পক্ষও রয়েছে মুখোমুখি অবস্থানে।
কিন্তু পাউবোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাদের নাকের ডগায় প্রভাবশালীরা বালু উত্তোলন করছে। দেখলে মনে হবে, পাউবোর লোকজন ড্রেজিং করছে।
এব্যাপারে অভিযোগকারি মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, আমরা বারবার প্রতিবাদ করছি তা বন্ধ করার জন্য। বিভাগীয় কমিশনার, দু জেলা প্রশাসক, নৌপুলিশ সুপার, কোম্পানীগঞ্জ, ছাতক উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। কিন্তু কাজ হচ্ছে না। প্রতিরাতেই লক্ষাধিক ঘনফুট বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে নৌপুলিশের ইনচাজ আনোয়ার হোসেন বলেন আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান চালিয়ে আটক সহ মামলা দিয়ে যাচ্ছি।
Comments