Image description

পর্যটনের জন্য খ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা শহরে নেই কোনো স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড। ফলে দূরপাল্লার বাসগুলো শহরের মূল সড়কের এক-তৃতীয়াংশ জায়গা দখল করে যাত্রী ওঠানামার জন্য পার্কিং করে। লোকাল বাসগুলোও রাস্তার মাঝেই ঘোরানো শুরু করে। রাস্তার দুই পাশে সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, কারসহ অবৈধ পার্কিংয়ের ফলে প্রতিদিনই সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ যানজট। এর সঙ্গে শহরের ভেতরে চলাচলকারী হাজারো ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার নিয়ন্ত্রণহীন চলাচল পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের সড়কজুড়ে থাকে যানজট। বিশেষ করে শহরের হবিগঞ্জ সড়কের যানজট সাধারণ মানুষের ভোগান্তির বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিবহন শ্রমিক নেতা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ পর্যটন নগরীতে স্থায়ী কোনো বাসস্ট্যান্ড না থাকায় সাধারণ যাত্রীদের পাশাপাশি বিপাকে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ ও পর্যটকদেরও।

পর্যটন শহর হিসেবে পরিচিত শ্রীমঙ্গলে প্রতিনিয়ত দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আগমন ঘটে। কিন্তু একটি পরিকল্পিত বাসস্ট্যান্ড না থাকায় তাদের যাতায়াত ব্যাহত হচ্ছে। এতে পর্যটনের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। শহরের সচেতন নাগরিকরা বলছেন, এখনই যদি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে না দেখা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে যানজট ও বিশৃঙ্খলা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

ইয়াছিন নামের একজন মোটরসাইকেল চালক বলেন, “শ্রীমঙ্গল শহরে এখন যানজট একটি বড় সমস্যা। বিশেষ করে হবিগঞ্জ রোডে জ্যাম লেগেই থাকে। জরুরি কাজে ভোগান্তিতে পড়তে হয় আমাদের। শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে প্রতিদিন দেরি হয়। কোনো নিয়ম নেই, সবাই যার যার মতো চলাচল করছে। একটু পরিকল্পনা থাকলে শহরটা এতটা বিশৃঙ্খল হতো না।” 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যবসায়ী বলেন, “বাসগুলো রাস্তাতেই দাঁড়ায়। সামনে-পেছনে অটোরিকশা। আমরা দোকানে বসেও বিরক্ত। একদিকে যানজট, অন্যদিকে শব্দদূষণ। শহরের পরিবেশটাই নষ্ট হয়ে গেছে।” হানিফ, শ্যামলী, এনা-এসব পরিবহনের বাসগুলো রস্তাায় এক-তৃতীয়াংশ জায়গা দখল করে যাত্রী উঠিয়ে নেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দূরপাল্লার এক বাস কাউন্টারের ম্যানেজার বলেন, “আমাদের আসলে করার কিছু নেই। বাস থামিয়ে যাত্রী তো উঠাতেই হবে। এতোদিন ধরে পর্যটন নগরীতে একটি স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড না থাকায় আমাদের সবার জন্যই এটা দুর্ভোগ। আমরাও বাসগুলো বেশি সময় দাঁড় করিয়ে রাখতে পারি জ্যাম লেগে যায়।”

শ্রীমঙ্গল পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের (১২২৩) সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ তাজু বলেন, “স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড না থাকায় এর প্রভাব পড়েছে পুরো শহরে। দূরপাল্লার বাসগুলো শহরের রাস্তার পাশে থামিয়ে যাত্রী নিতে হচ্ছে। রাস্তার দুই পাশে সিএনজিসহ অন্যান্য যানবাহন রাখতে হচ্ছে। বাসস্ট্যান্ড হলে শহরের যানজট অনেক কমে যাবে। আমরা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে একটি স্থায়ী বাসস্ট্যান্ডের দাবি জানাই।

শ্রীমঙ্গল ট্রফিক জোনের পুলিশ পরিদর্শক (টিআই) মোহাম্মদ সোহেল রহমান বলেন, সকল বাস কাউন্টারে উপজেলা প্রশাসন চিঠি পাঠিয়েছেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে শহরের বাহিরে কাউন্টার করার জন্য পাশাপাশি অটোরিকশা নিয়ন্ত্রনে আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ কববো তবে একটু সময় লাগবে।