
সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে “সিরাজগঞ্জ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতা" য় উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের হরিরামপুর হতে পাড়মনোহাড়া পর্যন্ত ৭৫০ মিটার রাস্তা নির্মাণ কাজের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে কর্মকর্তাদের যোগসাজসে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নির্মান কাজে শুরু থেকেই অনিয়মের আশ্রয় নিলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের কোন ভুমিকা নেই বলেও জানান এলাকাবাসী।
তাছাড়াও কাজের বিপরীতে নির্ধারিত হারে কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে তদারকি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় লোকজন কাজের নিম্নমান সম্পর্কে অবহিত করলেও তিনি তাতে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে উল্টো ঠিকাদারদের পক্ষেই সাফাই গেয়ে থাকেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এলজিইডির ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে উক্ত প্রকল্পে কাজের অনুকুলে ১ কোটি ৬৯ লক্ষ ১২ হাজার ৮৪ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। যার চুক্তি মূল্য ১ কোটি ৬০ লক্ষ ৬৭ হাজার ৫৯ টাকা। রাস্তাটি নির্মানের কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস নুর এন্টার প্রাইজ। তার থেকে কাজটি কিনে নেয় রেজাউল করিম লিটন নামে এক ঠিকাদারের কাছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তা নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করে সাব বেস ও ডব্লিউবিএম তৈরি করেছে। এতই নিম্মমানের যে, খোয়াগুলো হাত দিয়েই ভাঙ্গা যায়। অল্প কিছু জায়গায় এত নিম্নমানের প্রাইম কোড করেছে যা বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে গেছে। রাস্তায় শোল্ডার না থাকায় এখনই রাস্তার অনেক জায়গাই ধ্বসে গেছে। ব্রিজের নি-ওয়াল ও উইং ওয়াল থেকে কাজ করার কথা থাকলেও তা না করে ব্রিজের মধ্যে থেকে প্রায় ৯০ ডিগ্রি বাক করে রাস্তার নির্মান করায় ফলে সেখানে তৈরী হয়েছে একটি মরণ ফাঁদ। রাস্তায় একপার্শ্বে ব্লক দিলেও না নিম্নমানে হওয়ায় এখই ফাটল ধরেছে। রাস্তাটি আরও দেড় ফুট উ”চতা করার কথা থাকলেও তা করেনি উক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
এব্যপারে আব্দুল কাদের, বাহাদুর আলী, শাহাদৎ হোসেন, মমতাজ আলী, রফিকুল ইসলাম সহ এলাকাবাসী জানান, রাস্তার দুই পাশে মাটিতো দেই নাই, উল্টো রাস্তার নিচে থেকে মাটি কেটে তা রাস্তায় ফেলেছে। এতে রাস্তা তৈরী হওয়ার আগেই অনেক জায়গায় দেবে গেছে। খোয়া গুলো পোড়া মাটির মত যা হাত দিয়েই ভাঙ্গা যায়। যে টুকু ব্লক দিয়েছে তাও অল্প পরিমান সিমেন্ট দিয়ে তৈরী করা। আমরা বারংবার অফিসের লোককে বললেও তা তারা না শুনে উল্টো তাদের পক্ষ নিয়ে কথা বলতো তারা।
একশ একশ কাজতো হয় না জানিয়ে ঠিকাদর রেজাউল করিম লিটন বলেন, কাজ তো এখনো শেষ হয় নাই, কাজ চলমান আছে।
অপরদিকে কমিশন ভাগাভাগি বিষয়ে অস্বীকার করে উক্ত প্রকল্পের তদারকি কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী আলী আহমেদ আল মামুন বিরক্ত প্রকাশ করে বলেন একাজের বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি।
এবিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী এ,এইচ,এম, কামরুল হাসান রনী বলেন, কাজ সঠিক ভাবে না করলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বিল প্রদান করা হবে না। কাজের চুক্তি মোতাবেক কাজ না হলে এবং কাজে অনিয়ম হলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, প্রতিটা তদারকি কর্মকর্তাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে যেন ভবিষ্যতে তাদের দ্বারা এধরনের ভুল না হয়।
Comments