কক্সবাজারে টানা বর্ষণে অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত, লাখো মানুষ দুর্ভোগে

কক্সবাজারে সপ্তাহব্যাপী টানা ভারী বর্ষণের ফলে অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, যার জেরে লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এসব গ্রামের বেশিরভাগ বাড়িঘর বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পাহাড়ধসের আশঙ্কা রয়েছে।
অবিরত বর্ষণে কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল জোনের কলাতলী প্রধান সড়কেও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, যা যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে এবং পর্যটকদের দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে। জেলার উখিয়া, টেকনাফ ও চকরিয়াসহ নয় উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রামে ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সড়ক-উপসড়কে পানি জমে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে এবং সাগর উত্তাল রয়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানান, সোমবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কক্সবাজারে ১৭৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ভারী বৃষ্টি আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে এবং পাহাড় ধসের আশঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার কমপক্ষে ৫০টি গ্রামের প্রায় ৬০ হাজার পরিবারের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে উখিয়ার ১০টি এবং টেকনাফের ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উখিয়ার তিনটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, "ভারী বর্ষণের ফলে কিছু গ্রামে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আমরা তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। পাশাপাশি পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সকাল থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যেতে বলা হচ্ছে। এজন্য আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।"
অপরদিকে, উখিয়ায় টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ১০টি গ্রামে জলাবদ্ধতাসহ সবজি ক্ষেত, বীজতলা ও পানের বরজ নষ্ট হয়েছে। গ্রামীণ রাস্তাগুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করছেন এবং দ্রুত পানি নিষ্কাশন ও জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করছেন।
এছাড়াও, চকরিয়া, পেকুয়া ও রামু উপজেলার ৩০টি গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। পানিবন্দি এসব গ্রামের সবজি ও বীজতলাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
Comments