শিবগঞ্জে সেতুর অভাবে বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের চাকলমা পূর্বপাড়া গ্রামে সেতু না থাকায় বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে খাল পারাপার হচ্ছেন গ্রামবাসীরা। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ওই এলাকার মানুষেরা। গ্রামবাসীর অভিযোগ, বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মানের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এ বিষয়ে তাঁরা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সরেজমিনে চাকলমা পূর্বপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মোকামতলা-সোনাতলা সড়ক ঘেঁষে অবস্থিত খালের দক্ষিণ পাশে প্রায় হাজারো লোকের বসবাস। তাঁদের চলাচলের একমাত্র ভরসা ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের একটি নড়বড়ে সাঁকো। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত এই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করেন গ্রামবাসী।
বাঁশের সাঁকো দিয়ে খাল পেরিয়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় গ্রামবাসীরা যাতায়াত করে আসছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন মাঠের ফসল নিয়ে কৃষকরা এ সাঁকো পার হয় দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে। দৈনন্দিন জীবনে সাঁকোটি পার হয়ে যেতে হয় উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার খ্যাত মোকামতলা বন্দরে। সেখানে অবস্থিত মোকামতলা ইউনিয়ন পরিষদ, সরকারি ভূমি অফিস, খেলার মাঠ, কয়েকটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়, কেন্দ্রীয় মসজিদ, মন্দির, কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সোনালী ব্যাংক, রুপালী ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক, মোকামতলা মহিলা ডিগ্রি কলেজ, মোকামতলা উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ প্রায় ২৫টি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয়রা এই প্রতিবেদককে জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণের জন্য জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কিন্তু আজও সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। পরে তাঁরা নিজ খরচে বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করেছেন। সাঁকোটি যেন গ্রামবাসীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চাকলমা পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আলম মিয়া সাঁকো পার হওয়ার সময় বলেন, ‘আমাদের এই ভোগান্তি কেউ দেখতে আসেন না। এই ভোগান্তি কবে শেষ হবে জানিনা। কতবার কত লোক এসে মাপজোক দেয়। কিন্তু কোনো কাজ হয় না।
একই গ্রামের জিল্লুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা এই বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছি। বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও কৃষকদের জন্য সাঁকো পারাপার খুবই মারাত্মক। শিক্ষার্থীরা যখন স্কুলে যাওয়া-আসা করে তখন তাদেরকে সাথে নিয়ে অনেক সাবধানতা অবলম্বন করে সাঁকোটি পারাপার করে দিতে হয়। কৃষকরাও ফসল নিয়ে অনেক কষ্ট করে সাঁকোটি পার হন। এখানে একটা সেতু থাকলে আমাদের চলাচল সহজ হতো এবং এখানে একটা সেতু খুবই প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা ব্রিজের আশ্বাস দেন। কিন্তু নির্বাচনের পর তাদের আর খবর থাকে না। এর আগে ঢাকা থেকে লোকও এসেছিলেন এবং ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে এখান থেকে মাটিও নিয়ে গেছেন পরীক্ষা করার জন্য। কিন্তু এখনো কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
মোকামতলা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফাহিমা আক্তার জানান, বাঁশের সাঁকোর স্থানে সরকারি অর্থায়নে একটি সেতু নির্মাণ করার জন্য এর আগে উর্ধ্বতন কর্মকতাদের জানানো হয়েছে। আবারো জানাবো। এখানে একটা সেতু খুবই প্রয়োজন। সেতু নির্মাণ হলে আমি উর্ধ্বতন কর্মকতাদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো।
শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ মানবকণ্ঠকে জানান, সাঁকোটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Comments