Image description

ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে মারধরের পর স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় শ্রমিক দল ও ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী বাদী হয়ে মামলা করেছেন। 

মামলায় তজুমদ্দিন উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন, ফরিদের সহযোগী আলাউদ্দিন, তজুমদ্দিন সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো .রাসেলসহ ৬-৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। 

গত রোববার (২৯ জুন) দুপুরে তজুমদ্দিন উপজেলার শহরের চাঁদপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কামারপট্রি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সোমবার (৩০ জুন) মামলা দায়েরের পর রাত পৌনে ১০টার দিকে ভুক্তভোগী নারীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ভোলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ।

ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী অভিযোগ করে বলেন, আমার দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্ণা বেগমের সঙ্গে কিছুদিন ধরে ঝামেলা চলে আসছে। প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করি (ধর্ষণের শিকার) এবং ছোট স্ত্রী ঝর্ণা তজুমদ্দিনে বসবাস করে। কিছুদিন আগে আমি প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে গেলে কথা বলার জন্য শনিবার রাতে ফোন করে তজুমদ্দিন বাজার এলাকায় তার বাড়িতে যেতে বলেন দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্ণা। সেখানে পৌঁছানোর পর শ্রমিক দল নেতা ফরিদ উদ্দিন, তার সহযোগী আলাউদ্দিন, ছাত্রদল নেতা রাসেলসহ ৫-৭ জন আমাকে আটকে মারধর করে। এ সময় দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্ণা আমার সাথে সংসার করবে না বলে তারা আমার কাছে ৪ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না পেয়ে আমাকে আটকে রেখে এসএস পাইপ দিয়ে মারধর করে। খবর পেয়ে রোববার বেলা ১১টার দিকে আমার প্রথম স্ত্রী সেখানে পৌঁছে তাদেরকে কিছু টাকা দেন। তাদের দাবিকৃত চাঁদার টাকা কম হওয়ায় তারা আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার প্রথম স্ত্রীসহ আমাকে ফের মারধর করে দুজনকে ওই ঘরে আটকে রাখে।

তিনি আরও বলেন, ওইদিন দুপুরে তাদের কয়েকজন আমাকে ওই ঘর থেকে বের করে দোকানে চা খাওয়ানোর জন্য নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর বিষয়টি সন্দেহ হলে আমি ফিরে এসে দেখি ঘরটির দরজা বন্ধ অবস্থায় রয়েছে, বাহির থেকে অনেকক্ষণ জোরে জোরে দরজা ধাক্কা দিলে ভেতর থেকে একজন বেরিয়ে দরজা খুললে ভেতরে প্রবেশ করে দেখি আমার প্রথম স্ত্রী কান্না করছে। পরে জানতে পারি তাকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করেছে আসামিরা। বিষয়টি কাউকে জানালে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। ধর্ষণের শিকার আমার স্ত্রী কয়েকবার আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল, পরে আমি ৯৯৯ এ কল দিলে পুলিশ আমাদেরকে উদ্ধার করে তজুমদ্দিন থানায় নেন এবং আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি। আসামিদের কঠোর শাস্তির দাবিও জানান তিনি।

এসব অভিযোগের বিষয়ে আসামিদের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

এ বিষয়ে তজুমদ্দিন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোহাব্বত খান বলেন, ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছেন। ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ভোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।