কেএমপি কমিশনারের পতদ্যাগ ইস্যুতে আন্দোলনের কোন যৌক্তিকতা নেই

এস আই সুকান্তকে ছেড়ে দেওয়া, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের পতদ্যাগ এবং মেলা ইস্যুতে আন্দোলনের কোন যৌক্তিকতা নেই বলে উল্লেখ করেছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (অপর অংশ) নেতৃত্বীন ৮টি সংগঠন।
তাদের দাবি, যেহেতু এসআই সুকান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেহেতু এখন আন্দোলনের কোন যৌক্তিকতা নেই। উল্লিখিত ইস্যুতে চলমান আন্দোলনের সঙ্গে তাদের কোন সম্পৃক্ততাও নেই। তবে, কেউ ব্যক্তি স্বার্থে বা কোন ব্যানারে অনৈতিক কিছু করলে তার দায়ভার তারা নিবেন না বরং আইনের আওতায় নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তারা।
সোমবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে আট সংগঠনের যৌথ সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (একাংশ), রেড জুলাই, জুলাই রেভ্যুলেশনারী এলায়েন্স, জাস্টিস ফর জুলাই, ইনকিলাব মঞ্চ, আপ বাংলাদেশ, রঙমশাল ও পুসাবের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে চোঁখ হারানো আব্দুল্লাহ-আল সাফিন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, এসআই সুকান্তকে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় আমরা আন্দোলনে সরব হই। পরে তাকে চুয়াডাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তারের পর আন্দোলন সফল হওয়ায় আমরা আন্দোলন থেকে সরে আসি। কিন্তু আমরা গভীরভাবে লক্ষ্য করছি যে, এখানো আমাদের গুটিকয়েক সহযোদ্ধাদের ব্যবহার করে একটি বিশেষ মহল উক্ত আন্দোলন ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। যার দায়ভার কোনভাবেই জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতা নেবে না। আমরা জুলাইকে ব্যবহার করে এমন কোন কাজ করবো না, যা জুলাই আন্দোলনকে বিতর্কিত করে। আর কেউ এমন কাজ করতে চাইলে আমরা তাদের প্রতিহত করেবো।
এক প্রশ্নের জবাবে বলা হয়, জুলাই কর্মসূচির সাথে মেলার কোন যৌক্তিকতা নেই। যারা মেলার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে তাদের সাথে আমাদের কোন সর্ম্পকও নেই।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলা হয়, একটি স্বার্থান্বেষী মহল দৃষ্টিভঙ্গি অন্যত্র ঘুরিয়ে দিতে পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে সরব। এরপর দেখা যাবে এসআই সুকান্ত ইস্যু বাদ দিয়ে অন্য কোন কর্মকর্তার পদত্যাগ দাবিতে ওই মহলটি সরব হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জুলাই স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মাসব্যাপী ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। আগামীকাল ১ জুলাই থেকে এ কর্মসূচি শুরু হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ জুন বিকেলে একাধিক মামলার আসামি পুলিশের এসআই সুকান্তকে আটক করে খানজাহান আলী থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করে ছাত্র-জনতা। কিন্তু রাতেই থানা থেকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা গত ২৫ ও ২৬ জুন কেএমপির সদর দপ্তর ঘেরাও করে পুলিশ কমিশনারসহ অন্য কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। তবে এসআই সুকান্তকে গত ২৬ জুন চুয়াডাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানোর পর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি অংশ কর্মসূচিতে যোগদান থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অপর অংশটি ছাত্র-জনতার ব্যানারে পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারের অপসারণ দাবি করে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করে গত ২৬ জুন রাতে বিক্ষোভকারীরা কর্মসূচি স্থগিত রেখে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন তারা। কিন্তু পুলিশ কমিশনারকে অপসারণ না করায় গত ২৮ জুন বেলা আড়াইটা থেকে ‘ব্লকেড কর্মসূচি’ শুরু করেন। ওই দিন রাত সাড়ে ৮টায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (অপর অংশ) মুখপাত্র সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি ফের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
Comments