
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে একটি টিফিন ক্যারিয়ার (ভাতের বাটি) নিয়ে ঠাট্টার জেরে দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এসময় কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। রোববার (২৯ জুন) পৌর শহরের জগন্নাথপুর দক্ষিণপাড়া এলাকায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে নিশ্চিত করেছেন ভৈরব থানার এসআই আসিবুল হক ভূঁইয়া।
আহতদের মধ্যে লিটন মিয়া (৬০) ও পাবেল মিয়া (২২) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। গুরুতর আহত হাছেনা বেগমকে (৫০) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া রানা মিয়া (২৬), দিপু মিয়া (১৬) সহ আরও পাঁচজন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার (২৭ জুন) দুপুরে জগন্নাথপুর দক্ষিণপাড়া এলাকার ধন মিয়া বাড়ির ভাড়াটিয়া তুষার দুপুরের খাবার নিয়ে ভ্যানগাড়িতে করে বাজারে যাচ্ছিলেন। এসময় প্রতিবেশী ভূঁইয়া বাড়ির সায়মন ঠাট্টার ছলে তুষারের টিফিন ক্যারিয়ার খুলে দেখতে গেলে কথা কাটাকাটি হয়, যা একপর্যায়ে মারামারিতে রূপ নেয়। ওই দিন রাতে স্থানীয়রা বিষয়টি মীমাংসা করে দেন।
তবে ঘটনার দুই দিন পর, অর্থাৎ রোববার সন্ধ্যায় একই ঘটনার জেরে তুষারের সঙ্গে সায়মনের বন্ধু আসিফের আবারও বাকবিতণ্ডা হয়। রাত সাড়ে ৭টায় এই খবর স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। আসিফের পক্ষে ভূঁইয়া বাড়ি ও ভাওয়াল বাড়ির লোকজন এবং তুষারের পক্ষে মন্নাফ মিয়ার বাড়ির লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, যেমন দা, বল্লম, লাঠিসোঁটা ও ইট-পাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। টানা দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা এই সংঘর্ষে নারী-পুরুষসহ উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন।
স্থানীয় বাসিন্দা আকাশ মিয়া ও বিল্লাল মিয়া জানান, এই তুচ্ছ ঘটনায় রাস্তার পাশের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। তারা বলেন, "এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ শুক্রবার বিষয়টি মীমাংসা করলেও দুইদিন পর আবার একই ঘটনায় টানা দুই ঘণ্টা সংঘর্ষ চলে। বিষয়টি আমাদের জন্য দুঃখজনক। উঠতি বয়সের ছেলেরা মুরুব্বিদের কথা কর্ণপাত করে না।"
এসআই আসিবুল হক ভূঁইয়া জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এবং দুই পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Comments