
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী ইউনিয়নের আম চাষিরা এবার আম্রপালি জাতের আম নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। এক থেকে দেড় মাস আগেই ব্যাপারীরা অগ্রিম টাকা দিয়ে বাগান কিনে নিলেও এখন আম সংগ্রহ করতে আসছেন না। ফলে গাছে থাকা পাকা আম ঝরে পড়ছে এবং টানা বৃষ্টির কারণে অনেক আম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় চাষিদের অভিযোগ, আগাম বিক্রির পরেও চুক্তি অনুযায়ী আম নিতে বেপারীরা আর যোগাযোগ করছেন না। আবার অনেকেই চুক্তি ভেঙে কম দামে জোর করে বাগানের আম নিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে চাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
উথলী গ্রামের আমচাষি শহিদুল হক পবন বলেন, “আমি ৩ বিঘা আম্রপালি বাগান দেড় মাস আগে এক বেপারীর কাছে ১ লাখ ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করি। তারা অগ্রিম ১৭ হাজার টাকা দেয়। এখন যখন আম পাকার উপযুক্ত সময়, তখন বারবার ফোন দিলেও তারা রিসিভ করে না। প্রতিদিন অনেক আম গাছ থেকে ঝরে পড়ছে, পোকা ধরেছে।”
একই গ্রামের আরেক চাষি তুহিন আলী জানান, “আমি চার বিঘা বাগান দেড় লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছিলাম। হিমসাগর আমের গাছ থেকে আগেই আম তুলে নিয়ে গেছে বেপারীরা। কিন্তু আম্রপালি আমের কোনো খোঁজ নেই। পরে কোনো চুক্তি ছাড়াই ১৫ হাজার টাকা কম দিয়ে তারা বাগান থেকে আম নিয়ে গেছে।”
আরেক চাষি আমজেদ আলী বলেন, “আমি দেড় বিঘা জমির আম খুচরা বিক্রি করবো ভেবেছিলাম। কিন্তু অতিবৃষ্টির কারণে আমে পোকা ধরেছে, গাছের নিচে ঝরে পড়ছে। এখন বাজারে তেমন দামও নেই।”
স্থানীয়দের মতে, এবার আগাম বর্ষার প্রভাবে আম্রপালির স্বাদ ও গুণমান কিছুটা কমে যাওয়ায় বাজারে এর চাহিদা কমে গেছে। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে আমে পোকা ধরেছে, ফলে ব্যাপারীরা বাগান থেকে আম তুলতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এতে করে ব্যাপক লোকসানের আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন আম চাষিরা।
চাষিরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন যেন চুক্তিভঙ্গকারী বেপারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং আগামী মৌসুমে যেন সঠিক মূল্য ও নিরাপদ বাজার ব্যবস্থা গড়ে ওঠে।
Comments