ঝাড়ফুঁক, পানিপড়া ও তালা পড়া চিকিৎসার নামে চলছে অপচিকিৎসা

পেটব্যথা, ডায়রিয়া, কালো যাদু, ক্যানসারসহ সব রোগের চিকিৎসা হয় ঝাড়ফুঁক পানিপড়া ও তালা পড়া দিয়ে। চিকিৎসার নামে এই অপচিকিৎসা চলছে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ি উপজেলার পাচগাও ইউনিয়নের মান্দ্রা গ্রামের মোতালেব খানের বাড়িতে। আর এই কবিরাজি করছে মোতালেব খানের ২০ বছরের নাতি পারভেজ খাঁন।
পারভেজের এমন অপচিকিৎসার কারনে তার নিজ বাড়ি কাঠাদিয়া শিমুলিয়া ইউনিয়নের ধামারন থেকে এলাকাবাসী তাকে একাধিকবার ধাওয়া দেয়। পরে প্রশাসন গিয়ে তার আস্তানা গুড়িয়ে দিলে সে ওই এলাকা ছেড়ে তার নানা বাড়িতে এসে নতুন করে আস্তানা তৈরি করে। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, এভাবে চিকিৎসা করালে রোগীর ভালো হওয়ার চেয়ে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
যেকোনো জটিল ও কঠিন রোগ সেরে যাচ্ছে; কবিরাজের স্বজনদের এমন অপপ্রচারে লোকজন পারভেজ এর নানা বাড়িতে ভীর জমাচ্ছে। কবিরাজ সকাল-বিকেল পালা করে ঝাড়ফুঁকসহ নানা পদ্ধতিতে নানা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অপচিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে।
পারভেজ এর নানা বাড়িতে গিয়ে মানুষের জটলা দেখা যায়। এদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী। রোগীরা বোতলে পানি, তেল তাবিজ ও তালা নিয়ে এসেছেন। ঝাড়ফুঁক শেষ হওয়ার পর ওইখানে থাকা একটি বালতির ভিতর টাকা রাখতে দেখা যায় রোগীদের।
কয়েক বছর আগেও তাকে এলাকার সবাই পারভেজ নামেই চিনতেন। নামের পাশে ফকির যুক্ত হয়ে এখন হয়েছেন পারভেজ ফকির। এক ‘ফু’ দিয়েই জটিল ও কঠিন রোগসহ নানা রোগের চিকিৎসা দিচ্ছেন। ফি নয় পীরের আস্তানায় ওরসের কথা বলে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন পাভেজ ফকির।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে পারভেজ টিশার্ট পরে আসন নিয়ে বসে আছেন। পাশে বসে আছেন কয়েকজন নারী। সামনে রোগীরা দাঁড়িয়ে আছেন আর ঝাড় ফু দিচ্ছেন কবিরাজ। রোগীরা পীরের আস্তানায় ওরসের জন্য একটি বালতিতে টাকা ফেলে দিচ্ছেন। এরপর কবিরাজের লোকজন বালতির টাকাগুলো ভাঁজ করে বান্ডিল করছেন। এভাবেই চলছে ভন্ড কবিরাজের চিকিৎসা। নারী-পুরুষকে সামনে নিয়ে দোয়া পড়ে ফু দিয়ে প্রায় কয়েক বছর থেকে সর্বরোগের চিকিৎসার নামে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে যাচ্ছে এই পারভেজ।
স্থানীয়রা জানান, তিনি বিভিন্ন এলাকায় দালাল সেট করেছেন। তাদের মাধ্যমে সর্বরোগের চিকিৎসার কথা প্রচার চালাচ্ছেন।
কবিরাজ পারভেজ বলেন, শাহজালাল বাবার উসিলায় আজ কবিরাজ হয়েছি। জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা দিচ্ছি। সবাই আমার চিকিৎসা নিয়ে ভালো হচ্ছেন। প্রতিদিন রোগীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ২০ টাকা হাদিয়া নেই আর সেই টাকা দিয়ে হযরত শাহজালাল (রাঃ) এর দরবারে গিয়ে উরশ করি।
টঙ্গিবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, খোজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Comments