Image description

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, ‘আগে এক কোটি টাকার কাজে ৩০ লাখ টাকাই খেয়ে ফেলত। কোনো জবাবদিহি ছিল না। গত ২০ বছর এভাবে চলছে। জবাবদিহিহীন একটা সমাজ গড়ে উঠেছিল।

তাদের কেউ কেউ এখনো ভাবতেছে যে তাদের কোনো জবাবদিহি করতে হবে না। এটা হবে তাদের ভুল। আমরা যেহেতু কমিশন খাই না, সুতরাং আমরা কারো কাছে ধরা নেই। আমার ঠিকাদার এখানে কাজ করেন না, আমার কি কোনো ঠিকাদার আছে? আমি এখানে কমিশন খাই না, আমি কারো কাছে দায়বদ্ধ নই। সুতরাং এই কাজের জন্য যত টাকা বরাদ্দ দিয়েছে তার যথাযথ প্রয়োগ হতে হবে।’

বুধবার (২৫ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দেবীদ্বার অংশে দুই কোটি ৪৩ লাখ টাকার কাজে অনিয়ম হাতেনাতে ধরার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। 

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা আছেন তারা হচ্ছেন যেকোনো ‘এক্সকিউজ’ দেওয়ায় ট্রেনিংপ্রাপ্ত। তাদের যেকোনো জিনিসের জন্য ‘এক্সকিউজ’ রেডি থাকে এবং পিলুপাসিং করা, অর্থাৎ এটা আমার দায়িত্ব না, ওর দায়িত্ব, এই চেয়ার না, ওই চেয়ার।”

সড়কের অনিয়ম সম্পর্কে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘দুই কোটি ৪৩ লাখ টাকা জনগণের কোনো কাজে আসবে না। বরং জনগণের আরো দুর্ভোগ বেড়েছে। কথা ছিল ডিভাইডার বসানোর পূর্বে ৬ ইঞ্চি গাঁথনি করবে, কিন্তু তারা তা করেনি। রাস্তার পিচের ওপরেই ডিভাইডার তোলা হয়েছে, যা ধাক্কা দিলেই পড়ে যাবে। এখানে ব্লক দেওয়ার কথা ছিল তাও দেয়নি।

একটা রোড থেকে আরেকটা রোডের দূরত্ব থাকবে ৩০০ এমএম কিন্তু তারা দূরত্ব দিয়েছে ৪০০ এমএম। যেখানে ১০০ রড লাগত সেখানে তারা ৭০টি রড দিয়ে কাজ চালিয়ে দিয়েছে। কী পরিমাণ অনিয়ম করেছে দেখেন, এই দায়ভার ঠিকাদার, ইঞ্জিনিয়ার এবং যারা এ কাজের দায়িত্বে ছিলেন তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এটা এমন যে হচ্ছে যে কাজির গরু নামে আছে, কিতাবে আছে, কিন্তু গোয়ালে নেই।’ 

স্থানীয় সূত্র জানায়, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের দেবীদ্বার অংশে যানজট দূর করতে সড়কে রোড ডিভাইডার স্থাপনসহ সড়ক বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পে সরকারের পক্ষ থেকে দুই কোটি ৪৩ লাখ টাকার বরাদ্ধের বন্দোবস্ত করেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। ওই কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ছিল মেসার্স ভূঁইয়া এন্টারপ্রাইজ। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠান এই কাজের নানা অনিয়ম করার অভিযোগ পাওয়ায় হাসনাত আব্দুল্লাহ সরাসরি নিজে এসে হাতেনাতে ধরেন।

কাজের অনিয়ম সম্পর্কে মেসার্স ভূঁইয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. আশিকুর রহমান ভূঁইয়া (সবুজ) বলেন, ‘আমি যেভাবে ওয়ার্ক অর্ডার পেয়েছি সেভাবে করেছি। এখন মনে হচ্ছে আরো ক্ষতি হয়েছে। এর পরও যেভাবে ভালো হবে ক্ষতিপূরণ দিয়ে হলেও কাজটা শেষ করব।’