
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কোষাঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকার বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিদ্যালয়ের সামনে এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন। পাশাপাশি শিক্ষিকাকে চাকরি থেকে অপসারণের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও দামুড়হুদা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে, কোষাঘাটা গ্রামের মৃত শুকুর আলীর ছেলে জালাল উদ্দিনের সঙ্গে ২৩ বছর আগে চুয়াডাঙ্গা ঈদগা পাড়ার মেয়ে সানজিদা খাতুন পলির বিয়ে হয়। ২০০৫ সালে জালালের বাবা শুকুর আলী ছেলের সংসার মজবুত করতে কোষাঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক বিঘা জমি দান করেন। এই জমির বিনিময়ে পলি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা পদে চাকরি লাভ করেন।
দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যালয়টি সরকারিভুক্ত না থাকায় শিক্ষকদের বেতন বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে বিদ্যালয় সরকারিভুক্ত হলে শিক্ষকরা সরকারি বেতন পেতে শুরু করেন। পলি ও জালালের সংসারে জন্ম নেয় দুই পুত্রসন্তান, একজন নবম শ্রেণিতে ও অপরজন প্রথম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।
২০২৪ সালের শুরু থেকে পলি, জুরানপুর গ্রামের আত্তাব মল্লিকের ছেলে ও তিন সন্তানের জনক হাসিবুর রহমানের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ উঠেছে। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালে গোপনে স্বামী জালালকে তালাক দিয়ে ২ মে ২০২৫ তারিখে হাসিবুরের সঙ্গে পালিয়ে যান তিনি।
ঘটনার পর এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় এবং ৮ জুন সকাল ১০টায় বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, একজন শিক্ষিকার এমন আচরণ শিক্ষক সমাজ ও শিক্ষার্থীদের জন্য লজ্জাজনক। তারা সানজিদা খাতুন পলিকে শিক্ষকতা পেশা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানান।
স্বামী জালাল উদ্দিন বলেন, “আমার বাবা নিজের জমি দান করে তাকে চাকরি দিয়েছিলেন। সে এখন আমার মায়ের গয়না ও ঘরের টাকা নিয়ে অন্য পুরুষের সঙ্গে পালিয়ে গেছে। আমি এর বিচার চাই।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াসমিন জানান, “ঘটনাটি জানার পর বিদ্যালয়ে আসতেও কষ্ট হচ্ছে। মানুষের নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু হাসান বলেন, “বর্তমানে বিদ্যালয় ছুটিতে রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তিথি মিত্র জানান, “আমি ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে সানজিদা খাতুন পলির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
Comments