চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে অতিরিক্ত প্রহারে হাজতির মৃত্যুর অভিযোগ

চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের হাজতি আসামির মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (২ জুন) ভোরে সাড়ে পাঁচটার দিকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত মহিরুল ইসলাম (৪০) দর্শনা থানার কুড়ালগাছি পশ্চিমপাড়ার মৃত আকবর আলীর ছেলে।
জানা গেছে, দামুড়হুদা থানার ২০২৩ সালের একটি মাদক মামলার আসামি ছিলেন তিনি। শনিবার বেলা ১১ টার দিকে দর্শনা থানা পুলিশ মহিরুলকে গ্রেপ্তার করে। একইদিন আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
কারা সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাত ১টা ৫৫ মিনিটের দিকে কারাগারে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন মহিরুল। সাথে সাথেই তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর রাতে তার মৃত্যু হয়।
দুপুর ১২ টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ প্রথম শ্রেনীর ম্যাজিস্ট্রেট এ. এস. এম. আব্দুর রউফ শিবলুর উপস্থিতিতে হাসপাতালের লাশঘরে সদর থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পন্ন করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়।
তবে এ মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলে মহিরুলের ভাতিজা গাফ্ফার বলেন, দর্শনা থানার দুজন পুলিশ যখন ছোট আব্বুকে বাড়ি থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাচ্ছিলো আমরা বাধা দেয়ার চেষ্টা করি। পুলিশ বলছিলো ওয়ারেন্ট আছে ওয়ারেন্ট আমাদেরকে দেখায়নি। আমি ওয়ারেন্ট দেখতে চাইলে আমাকে থাপ্পড় মারতে চেষ্টা করে। গ্রেপ্তারের পর পুলিশ সদস্যরা মারধর করেছে।
নিহতের ভাতিজি কাজল রেখা বলেন, সাদা পোশাকের দুজন পুলিশ হঠাৎ করেই বাড়িতে ঢুকে পড়ে। কিন্তু চাচা তাদেরকে জিঙ্গেস করছিলো আমি কি করেছি, আমাকে কেন গ্রেপ্তার করা হবে। আমাদের সামনেও পুলিশ চাচাকে মারধর করে। চাচা সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন।অতিরিক্ত মারধরের কারনে চাচা মারা গেছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. রকিন সাদী বলেন, কারাগার থেকে হাজতি মনিরুলকে যখন জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন, কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে তাকে মৃত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে তিনি স্ট্রোকে মারা যেতে পারেন।
এ বিষয়ে দর্শনা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহীদ তিতুমীর বলেন, বেলা ১১ টার মধ্যে দামুড়হুদা থানার মাদক মামলার ওয়ারেন্টবুক্ত আসামি মহিরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এবং সাড়ে ১১ টার মধ্যেই আমরা তাকে কোর্টে চালান করে দিই। আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। অতিরিক্ত প্রহরের ঘটনাটি সঠিক নয়।
Comments