তীব্র তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত জনজীবন, বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা

গত চার দিন ধরে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। অসহ্য গরমে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে অসুস্থতার হার বেড়ে যাওয়ায় জেলার সদর হাসপাতালে রোগীর উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানিয়েছেন, শনিবার দুপুর ১২টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে, শুক্রবার ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি, বৃহস্পতিবার ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি এবং বুধবার ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার থেকে চুয়াডাঙ্গায় এই তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, একজন চিকিৎসকের চারপাশে ২০-২২ জন রোগী ভিড় করছেন। এদের অধিকাংশই গরমজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। হাসপাতালের ডায়রিয়া ও মেডিসিন ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার চারগুণেরও বেশি রোগী ভর্তি রয়েছেন। অনেক রোগী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেলেও, পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বেগ পেতে হচ্ছে।
মোমিনপুর গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম তার অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। তিনি জানান, জরুরি বিভাগে প্রচুর ভিড় ছিল। চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি তার স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন এবং এখন তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভালো।
সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের একজন সেবিকা জানান, প্রতিদিন গড়ে ৫০ জনের বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন এবং গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২৫-২৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. তারেক জুনায়েদ বলেন, “৫০ শয্যার জনবল নিয়ে প্রায় আড়াইশ শয্যার হাসপাতালের মতো সেবা দিতে হচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ৪০০ রোগী ভর্তি থাকছেন, যা ধারণক্ষমতার চারগুণ। এমন পরিস্থিতিতে রোগীদের সেবা প্রদান করা আমাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।”
তিনি এই তাপপ্রবাহের সময় সুস্থ থাকার জন্য বিশ্রাম নেওয়া, রোদ ও গরম এড়িয়ে চলা এবং বাইরের খাবার পরিহার করে ঘরের তৈরি খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
Comments