
কুষ্টিয়ায় চৌড়হাসে স্টুডেন্ট ভাড়া সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এতে কুষ্টিয়া-খুলনা রুটের বাসগুলো আটকে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুর দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা এই বাসগুলো আটকে দেন।
মারধরের শিকার ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীর নাম রাফসানা আক্তার ঝুমা। তিনি লোকপ্রশাসন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, রাস্তার পাশে এসে অন্য বাসে উঠতে গেলে আমাকে বলা হয় এই বাসে উঠেন, ওইখানে সিট নাই। তখন আমি বলি আমি কিন্তু ২৫ টাকা স্টুডেন্ট ভাড়া দিবো, তখন বাস হেলপার বলে কোথাকার শিক্ষিত তুমি, শিক্ষিত হইছো না অশিক্ষিত হইছো। আমরা শেখপাড়ায় থাকি — ভাড়া কত আমি জানি। তুমি নাটক শুরু করছো?
ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী আরো বলেন, তখন আমি বাসের হেল্পারকে বলি, আপনি আমার শিক্ষা নিয়ে কথা বলছেন কেন? বলতেই আমার সাথে রাগারাগি ও খারাপ আচরণ করতে শুরু করে। তখন আমি আমার হাসবেন্ডকে কল করতে গেলে উনি আমার ফোন কেড়ে নিয়ে আমাকে কিল-ঘুষি মারে। আমার মুখে চারটা ঘুষি মারে। আমি নেমে যাবো, তখন একটা মানুষও প্রতিবাদ করেনি। আমার বাবা-মা তুলে গালিগালাজ করতে শুরু করে। পরে ক্যাম্পাসে কয়েকজন শিক্ষার্থী এলে ওনারা চলে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলেন, যে বা যারা আমাদের নারী সহপাঠীকে মারধর করেছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। একজন নারী শিক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও মারধর করার সাহস তারা কোথা থেকে পায় এর জবাব চাই।
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার ভাড়া সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও আবার একই সমস্যা, ভাড়া নিয়ে আর কোনো টালবাহানা চলবে না। বাস মালিক পক্ষকে লিখিত মুচলেকা দিতে হবে এবং অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত এই মারধরের ঘটনার অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত বাস আটকে রাখা হবে।
পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আব্দুর রউফ বলেন, আমরা ঘটনাটি জানতে পেরেছি। শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে কয়েকটা বাস আটক করেছে। বাসগুলো ক্যাম্পাসে নিরাপদে রাখা হয়েছে। মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ শাহিনুজ্জামান বলেন, আমি কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের বাস মালিক সমিতিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ডেকেছি। তারা বললো আসতেছে। যেহেতু আমাদের নারী শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে, আমাদের শিক্ষার্থী যেমন বিচার চাইবে, সেই অনুযায়ী বিচার করা হবে। অন্যথায় গাড়িগুলো সব আটকে রাখা হবে।
Comments