Image description

সরকারি তিতুমীর কলেজে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে কলেজ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। জানা গেছে, মেধার ভিত্তিতে হোস্টেলে  হলের সিট বরাদ্দের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বেধরক পেটায় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। সেই ঘটনার দৃশ্য ধারণ করতে গেলে কয়েকজন সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নিয়ে পিটিয়েছে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। এবং নারী সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নিয়ে হুমকি-ধুমকি দেওয়া হয়েছে।

সাংবাদিকদের মোবাইল কেড়ে নিয়ে ভিডিও মুছে ফেলার পাশাপাশি জিহ্বা ছিড়ে ফেলার হুমকি দেয় হামলাকারীরা। আক্রান্ত সাংবাদিকদের সকলেই সরকারি তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির সদস্য। হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন ডেইলি ক্যাম্পাসের নিজস্ব প্রতিবেদক ও সরকারি তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক আমান উল্লাহ আলভি।

সোমবার (২৬ মে) সকালে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার হওয়া সাংবাদিকদের অন্যরা হলেন- সারাবাংলা ডটনেটের সাত কলেজ প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ মজুমদার রাব্বি, ডেইলি ক্যাম্পাসের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি আল-আমিন মৃধা, এশিয়ান টিভি অনলাইনের কলেজ প্রতিনিধি মাহমুদা আক্তার, রাইজিং বিডির কলেজ প্রতিনিধি উম্মে হাফসাসহ কয়েকজন।

এ বিষয়ে সরকারি তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ ড. অধ্যাপক ছদরউদ্দিন আহমেদ জানান, তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযুক্তদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।

তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমাম হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা নিন্দনীয়। হামলাকারীদের মধ্যে কয়েকজনের নামের তালিকা কেন্দ্রে পাঠিয়ে তাদেরকে বহিষ্কার করার বার্তা দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হামলায় গুরুতর আহত আমান উল্লাহ আলভী বলেন, নায়েক নূরকে ছাত্রদলের একটি পক্ষ রিকশায় করে তুলে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় আমি ভিডিও ধারণ করতে গেলে আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায় ছাত্রদল, আমাকে বেধরক পেটানো হয়। আমি তাতে গুরুতর আহত হয়েছি। আমার সাথে থাকা ফোন কেড়ে নিয়ে জোড় পূর্ব ভিডিও ডিলিট করে দেয়। আমার সাথে থাকা এশিয়ান টেলিভিশনের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মাহমুদা আক্তার ও রাইজিংবিডি.কম এর উম্মে হাফছার‌ও ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও ডিলিট করে। তাদেরকে হেনস্তা জরা হয়।

হামলায় জড়িত কলেজ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা হলেন- যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ মোল্লা, যুগ্ম আহ্বায়ক রিমু, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাশেদুজ্জামান হৃদয়, যুগ্ম আহ্বায়ক খাজা মাইনুদ্দিন , যুগ্ম আহ্বায়ক হারুনর রশীদ, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বাইজিদ হাসান সাকিব, যুগ্ম আহ্বায়ক ইমাম উদ্দিন, আহ্বায়ক কমিটি সদস্য আল আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক নুর উদ্দিন জিসান, যুগ্ম আহ্বায়ক তোফায়েল আহমেদ, যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক সোহাগ, আক্কাসুর রহমান আঁখি হলের সভাপতি তোহাসহ কলেজ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।

হামলার শিকার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আলী আহমেদ বলেন, গতকাল হলের শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করার কথা ছিল কিন্তু তা করেনি। এ বিষয়ে আমরা প্রিন্সিপালের কাছে জানতে গেলে তাকে না পেয়ে প্রিন্সিপালের কক্ষের সামনে অবস্থান করি। এ সময় কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব সেলিম রেজাসহ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আমাদের হুমকি দেয়। আজ পুনরায় এ বিষয়ে আন্দোলন কর্মসূচি করতে গেলে ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমাম হোসেন ও সদস্য সচিবের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা হয়। 

তিনি আরো বলেন, অধ্যক্ষ আমাদের বিশৃঙ্খলাকারী বলে ছাত্রদলের হাতে উঠিয়ে দিয়েছেন। আজকে তিনি আমাদের উপর হামলা করিয়েছেন। আগে হল ছাত্রলীগের অধীনে থাকতো এখন ছাত্রদলের অধীনে।