Image description

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উপজেলা মুখ্য সমন্বয়ক মো. জহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে যুবদল নেতাকে মারধর ও সাংবাদিকদের অসম্মানের অভিযোগে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) একই দিনে দুটি ঘটনা স্থানীয় রাজনৈতিক ও সাংবাদিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

যুবদল নেতাকে মারধরের অভিযোগ
দুপুরে লোহাগাড়া সদরের ডায়াবেটিক হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা থেকে বান্দরবানের লামা উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদল সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক হোসেনকে (৪৫) তুলে নিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ফারুকের ছেলে ফয়সাল উদ্দিন জানান, তাঁর অসুস্থ বাবাকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় ৭-৮ জন দুষ্কৃতকারী হামলা করে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কলের পর পুলিশ বিকেল সাড়ে ৪টায় পোস্ট অফিস এলাকা থেকে ফারুককে উদ্ধার করে। তাকে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ফারুকের ভগ্নিপতি মো. ইসমাইল হোসেন এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. ফারহানা জানান, ফারুকের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হয়।

সাংবাদিকদের প্রতি অসম্মানজনক আচরণ
একই দিন রাত সাড়ে ১১টায় জহির উদ্দিন উপজেলার একটি রেস্টুরেন্টে জরুরি সংবাদ সম্মেলনের ডাক দেন। স্থানীয় গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা কল ও বার্তা পেয়ে উপস্থিত হলেও রাত ১টা পর্যন্ত কোনো বক্তব্য না দেওয়ায় সাংবাদিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরে যান। সাংবাদিকরা এই আচরণকে সময়ের অপচয় ও পেশাগত অসম্মান হিসেবে অভিহিত করেছেন।

লোহাগাড়া প্রেসক্লাবের এক সদস্য বলেন, “সংবাদ সম্মেলন ডেকে বক্তব্য না দেওয়া সাংবাদিকদের প্রতি চরম অবমাননা এবং দায়িত্বহীন আচরণ।”

জহির উদ্দিনের অভিযোগ অস্বীকার
অভিযোগ অস্বীকার করে জহির উদ্দিন দাবি করেন, “ফারুক মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। স্থানীয়রা তাকে ইয়াবাসহ আটক করেছে, যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে। পরে তাকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।” সংবাদ সম্মেলন প্রসঙ্গে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

পুলিশের বক্তব্য
লোহাগাড়া থানার ওসি আরিফুর রহমান বলেন, “অভিযোগের তদন্ত চলছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই ঘটনায় লোহাগাড়ার রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সাংবাদিক সমাজের ক্ষোভের পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।