Image description

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও জনবলের তীব্র সংকটের কারণে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের, বিশেষ করে গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের রোগীদের, চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। হাসপাতালে সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চিকিৎসার জন্য রোগীদের দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জীবননগর উপজেলায় সরকারি জরিপ অনুযায়ী ২ লাখ ১২ হাজার জনগোষ্ঠী রয়েছে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী মহেশপুর, দামুড়হুদা ও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা থেকেও অনেক রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু এই বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য মাত্র ২ জন এমবিবিএস চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন। ৪ জন কনসালটেন্টের মধ্যে ১টি পদ শূন্য, এবং বাকি ৩ জনের মধ্যে ২ জন ঢাকায় সংযুক্তিতে কর্মরত। এছাড়া, হাসপাতালে মোট ১২৭টি জনবলের পদের মধ্যে ৩৮টি পদ শূন্য রয়েছে।

সম্প্রতি উপজেলায় ভাইরাস জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালে রোগীর চাপও বেড়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আমেনা খাতুন বলেন, “কয়েকদিন ধরে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছি। সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু এখনো ডাক্তার দেখাতে পারিনি।” অপর রোগী চুমকি খাতুন জানান, “গতকাল হাসপাতালে এসে শুনলাম ডাক্তার নেই, তাই বাড়ি ফিরে গিয়েছিলাম। আজ আবার এসেছি।”

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. মকবুল হাসান বলেন, “হঠাৎ ভাইরাস ফ্লু জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে, যার কারণে রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ থাকায় রোগীরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিড় করছেন। প্রতিদিন গড়ে ৬০০ জন রোগীকে সেবা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসক ও জনবলের সংকটের কারণে সেবা প্রদানে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।”

তিনি আরও জানান, সারাদেশের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেই চিকিৎসক সংকট রয়েছে। তবে আশার কথা, একজন মেডিকেল অফিসার আজ (রোববার) যোগদান করবেন। এছাড়া, ৪৮তম বিসিএস-এর চিকিৎসকরা যোগদান করলে এই সংকট অনেকটাই কমে যাবে।

স্থানীয়রা জানান, চিকিৎসক ও জনবলের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। অনেক রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। তারা দ্রুত চিকিৎসক ও জনবল সংকট নিরসনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নের দাবি জানিয়েছেন।