Image description

নদীমাতৃক জেলার মধ্যে মুন্সীগঞ্জ একটি অন্যতম জেলা রয়েছে পাচঁটি উপজেলারই নদীর পার ঘেসা ও বেশির ভাগ নিচু জমি বর্ষার পানি বাড়ার সাথে সাথে এ এলাকা গুলোর আনাচে-কানাচে গ্রামগুলোসহ উপজেলার লৌহজং, শ্রীনগর, সিরাজদিখান এর বিভিন্ন এলাকায় মৌসুমি ডিঙ্গি নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে মাঝি ও মিস্ত্রীরা। আশ-পাশের ইউনিয়ন গুলোতে গৃহস্থালি কাজে এবং খেয়া পারাপারে ও গো-খাদ্যের জন্য কোষা ও ডিঙি নৌকার কদর বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

আর এ সুবাদে লৌহজয়ের,গোয়ালীমান্ডা ষ্ট্র্যান্ডের পাশে গড়ে উঠেছে ডিঙি ও কোষা নৌকা তৈরী ও বিক্রির বাজার। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন ক্রেতারা তাদের পছন্দসই নৌকা এখান থেকে কিনে থাকেন। এদিকে ইছামতি,ধলেশ্বরী নদী ঘেরা সিরাজদিখান উপজেলার প্রায় অর্ধেক অংশ বর্ষা শুরু হওয়ার সাঙ্গে সঙ্গে প্লাবিত হয়ে থাকে। বর্ষা মৌসুম এলেই এই এলাকার মানুষের চলাচলের প্রধান বাহন হিসেবে নৌকা ব্যবহার করে থাকে। উপজেলার নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলিতে স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীরা নৌকার মাধ্যমে স্কুলে যাতায়াত করে থাকে। বর্ষার শুরুতেই এলাকার মৌসুমি জেলেরা নৌকা দিয়ে রাত দিন মাছ শিকারে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। উপজেরার মাওয়া নিচু এলাকার বাসিন্দারা নৌকার মাধ্যমে খেয়া পার হয়ে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রাম ও স্কুল, কলেজ, হাট বাজারে পাড়াপাড় হয়ে থাকে।

উপজেলার শ্রীনগর, লৌহজং, সিরাজদিখান,ইছাপুরা,রাজানগর,বালুচর, কালীনগর, কষ্ণনগর, চরবয়রাগাদী, পাইনারচর, শেখরনগর, ভাড়ারিয়া, মধ্যপাড়া, খারশুল, চিত্রকোট ইউনিয়নের বেশ কিছু নৌকার ব্যবহার হচ্ছে যুগ যুগ ধরে। এসব গ্রামে প্রায় বাড়িতেই বর্ষাকালে যাতায়াতের জন্য একটি করে নৌকা রয়েছে। এক সময় বর্ষা মৌসুমে এসব এলাকায় পালতুলা নৌকা চলতো। বিভিন্ন হাট বাজারে মালামাল আনা নেওয়ার জন্য গয়না, ডিঙ্গি নৌকার ব্যবহার হত। 

উপজেলার মেদিনীমন্ডল ইউনিয়ন বিএনপির নেতা লিমন বলেন, এ ইউনিয়নে ছোট বেলা থেকেই বাবার সাথে নৌকা তৈরির কাজ দেখার জন্য বাজার হাটে যেতাম। দেখতাম পোর বর্ষা এলেই নৌকা তৈরির কদর বেড়ে যায় পোড়– হাট জুরেই,জেন নৌকা তৈরীর এক মহাউৎসব সেখানে। 

মিস্ত্রী এনামুল বলেন নৌকা তৈরিতে বিশেষ কোন কাঠ নির্দিষ্টভাবে ব্যবহার হয় না। আগে ভালো ভালো কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরী করতাম , এখন কড়াই, চাম্বল ও মেহগনি দিয়েই বেশী নৌকা তৈরি করি। নৌকা তৈরিতে কাঠ ছাড়াও মাটিয়া তৈল, আলকাতরা, তাড়কাটা, গজাল, পাতাম ইত্যাদি লাগে যা নৌকাকে দীর্ঘ দিন টিকসই রাখে।

এক জনে প্রতিদিন একটি ডিঙ্গি নৌকা তৈরি করতে পারি। বার হাতের একটি নৌকা তৈরিতে ৪৫শ -৫৮শ টাকা খরচ হয় আর বিক্রি হয় সাত থেকে সারে সাত হাজার টাকায়। একটু ছোট ডিঙ্গি তৈরিতে ২২শ টাকা খরচ হয় বিক্রি হয় তিন থেকে সারে তিন হাজার টাকায়।