Image description

চট্টগ্রামের রাউজানে বন্ধুর বউকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে না করে এক মাস ধরে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মো. মোজাহিদ ইমন ওরফে ইমাম (২৬) নামে কথিত এক সমন্বয়কের বিরুদ্ধে। গত শনিবার রাতে রাউজান পৌরসভার ০৩ নম্বর ওয়ার্ডের আসাদ চৌধুরী বাড়িস্থ ইমামের নানার বাড়ির একটি বাসা থেকে বন্ধুর স্ত্রীসহ স্থানীয়রা হাতে-নাতে ধরে রাউজান থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করেন। 

ইমাম রাউজান পৌরসভার ০৩ নম্বর ওয়ার্ডে আসাদ চৌধুরী বাড়ির বসবাসকারী গার্মেন্টস কর্মী হারুন অর রশিদ ও  কোহিনুর বেগম পুত্র। ইমন তার নানার বাড়িতে বেড়ে উঠলেও তার জন্ম স্থান সম্পর্কে কেউ সঠিক তথ্য জানাতে পারেনি।

জানা যায়, ইমনের বাসার অদূরে ছিলে তার বন্ধু ছাত্রদলকর্মী ইমদাদুল হক এনামের ঘর। দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব, এনামের বাসায় যাতায়ত ছিল ইমনের। এরমধ্যে ইমনের সঙ্গে এনামের স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে। ঘনিষ্ট হতে থাকে দুইজন। গত মে মাসের ২৫ এপ্রিল কাউকে কিছু না বলে ঘর থেকে বের হয়ে যান এনামের স্ত্রী। ফিরে আসে ২৮ মে। এরপর গত ৩১ মে আবারও উধাও হয়ে যায় এনামের স্ত্রী। এরপর থেকে নিখোঁজ। সমন্বয়ক ইমন তার বন্ধু এনামকে শান্তনা দেয়, থানায় মামলা করার সময় ইমনও গিয়েছিল। সর্বশেষ গত শনিবার রাতে ইমনের বাসা থেকে এনামের স্ত্রীকে সহ ধরে থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করে জনতা। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, শত শত মানুষের উপস্থিতিতে ইমন ও তার বন্ধুর বউকে এনে পুলিশের গাড়িতে তোলা হচ্ছে। 

সূত্র জানায়, ইমন জন্মপরিচয় নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। নানার বাড়িতে বেড়ে উঠা ইমন তার বাবার নাম গার্মেন্টসকর্মী হারুন অর রশিদ দাবি করলেও তার সঠিক তথ্য কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। গৃহস্তের বাড়িতে কাজ করতেন মা কৌহিনুর বেগম। ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করলেও অভাবের কারণে আর পড়াশোনা করা সম্ভব হয়নি ইমনের। সে দোকান কর্মচারীর কাজ নেয়। এরমধ্যে ০৫ আগস্ট পরবর্তী নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করে ঢালপালা মেলতে থাকে ইমনের। ছাত্রজনতা আন্দোলনের ছবি সুপার এডিট করে রাউজানের সমন্বয়ক হিসেবে পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি, মানুষকে হয়রানি, মাটি কাটার টাকা ভাগাভাগি, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া, আবার মোটা অংকের টাকা নিয়ে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান চালু করাসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যান ইমন। গত ৪-৫ মাস আগে কাধে বিদেশী রাইফেল নিয়ে ছবিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। 

ইমনের বন্ধু ছাত্রদলকর্মী ইমদাদুল হক এনাম বলেন, আমার স্ত্রী প্রথম ২৫ তারিখ ঘর থেকে চলে যায়, পরে ২৮ তারিখ ফিরে আসে। আমি আজ জানতে পারলাম আমার স্ত্রীকে নিয়ে ইমন কক্সবাজার গিয়েছিল। এরপর গত ৩১ মে আবারও পালিয়ে যায় আমার স্ত্রী। ইমন আমাকে শান্তনা দিয়েছিল, থানায় গিয়েছিল। ইমন যে আমার স্বর্বনাশ করেছে তা জানতাম না। এমন আমার স্ত্রীকে ১মাস ধরে ধর্ষণ করেছে। আমার কাছে তার প্রমাণ আছে। এখন থানা পুলিশ মামলা নিচ্ছে না। 

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, ‘ইমন নামে এক কথিত সমন্বয়ককে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন। ওই মহিলার স্বামী বাদি হয়ে মামলা করলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে যদি মামলা না করে তাহলে যে আইনের ধারা আছে সে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাকে অস্ত্রকাধে নেওয়া ছবির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে দাবি করে একটি রিসোর্টে গিয়ে ছবিটি তুলেছিল। সে বখাটে টাইপের ছেলে, বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত এটা জনগণের কথা।