Image description

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল থানায় গত ১৩ জুন ওসি হিসেবে যোগদান করেন ইন্সপেক্টর হাশমত আলী। এরই মধ্যে ২০১২ সালের ৫ অক্টোবর জয়পুরহাট সদরে দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মুক্তির দাবিতে জামাতে ইসলামীর মিছিলে পুলিশের হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা যায় জামাতের মিছিলে নেতাকর্মীদের উপর পুলিশ লাঠি চার্জ করছে। সেসব পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ক্ষেতলাল থানার নবাগত ওসি হাশমত আলীকেও লাঠিচার্জ করতে দেখা যায়। তিনি তৎকালীন জয়পুরহাট সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। 

এসব ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর বুধবার (২৫ জুন) সকালে ওসি হাশমত আলী ক্ষেতলাল থানা ছেড়ে চলে যান। পরবর্তীতে পুরো উপজেলায় গুজব  ছড়িয়ে পড়ে ওসি হাশমত আলী থানা ছেড়ে পালিয়েছেন। 

জানা যায়, ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মুক্তির দাবিতে জয়পুরহাট শহরে জেলা জামাতে ইসলামীর আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। এরই একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। তৎকালীন উপ-পরিদর্শক হাশমত আলীর লাঠিচার্জে তৎকালীন জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য এবং জয়পুরহাট জেলা জামাতের সেক্রেটারি অধ্যাপক নজরুল ইসলামসহ বহু নেতাকর্মী গুরুতর আহত হোন। সেই দিনই এসআই হাশমত আলীর গুলিতে শিবিরের সাথী সদস্য বদিউজ্জামাল নিহত হোন বলেও অভিযোগ জামাতে ইসলামীর।

এ ঘটনার ১৩ বছর পর এসআই হাশমত আলী ক্ষেতলাল থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করেন। এরপরই ১৩ বছর আগের জামাত ইসলামীর নেতাকর্মীদের পেটানোর সে ভিডিও ভাইরাল হয়। 

এ বিষয়ে ক্ষেতলাল উপজেলা জামাতে ইসলামীর সেক্রেটারি শামীম হোসেন মন্ডল  বলেন, তিনি আমাদের জয়পুরহাটের জামাতে ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম স্যারকে আঘাত করেছেন। আমাদের ভাইদের হয়রানি করে গ্রেপ্তার করেছে। ওই একই মিছিলে আমাদের জয়পুরহাটের প্রথম শিবিরের শহীদ বদিউজ্জামানকে তিনিই গুলি করেছেন উনার গুলিতেই আহত হয়ে আমাদের ভাইটা কয়েকদিন পরেই শাহাদাত বরণ করেছিলেন। তিনি যতদিন ছিলেন ততোদিন পর্যন্ত জামাতের উপর দমন, নিপীড়ন চালিয়েছেন। এরপর ক্ষেতলাল থানায় আবারও আসেন ওসি হয়ে। আসার পরে এলাকার মানুষের উপর জুলুম নির্যাতন, গ্রেপ্তার হুমকি এগুলা বাড়িয়ে দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই যে আমাদের জুলাই অভ্যুত্থান হলো। এই অভ্যুত্থানই তো জুলুম, নির্যাতন, দুর্নীতি, নিষ্পেষণ বিরুদ্ধেই তো আমাদের জুলাই অভ্যুত্থান। সেই জুলাই অভ্যুত্থান পর যদি কেউ প্রমোশন নিয়ে এসে সাধারণ মানুষের উপর জুলুম নির্যাতন শুরু করে তাহলে আমরাতো সেটা মেনে নেব না। তাই সাধারণ মানুষ হিসেবে, জামাতে ইসলামীর কর্মী হিসেবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সে আর এক দিনও ক্ষেতলাল থানায় থাকতে পারবে না । ২য় কথা তার বিরুদ্ধে আমরা মামলা করব, ৩ নম্বর কথা হচ্ছে আমরা তাকে চাকুরী থেকে অব্যবহিত দেওয়ার যতটুকু কাজ করা দরকার আমরা করব ইনশাআল্লাহ। 

এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে ক্ষেতলাল থানায় গিয়ে ওসি হাশমত আলীকে পাওয়া যায়নি। 

পরে থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) এস এম কামালের সাথে কথা হলে তিনি জানান, তার বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় তিনি সকালে আমাকে সরকারি ফোনসহ চার্চ বুঝিয়ে দিয়ে এসপি অফিসে গিয়েছেন। এরপর তিনি আর ফেরেননি। সম্ভবত এসপি স্যারের থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি গেছেন।

এবিষয়ে পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুল ওহাবকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি  ফোন রিসিভ করেননি।