
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক ইউনিয়নের ধাড়িয়া বাজার থেকে কালকী গ্রাম পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা দীর্ঘ ২০ বছরেও পাকা হয়নি। রাস্তাটিতে লাগেনি কোনো উন্নয়নের ছোয়া। বর্তমানে ওই রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তাটির বেহাল দশা হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীদের। স্থানীয়দের অভিযোগ, হাসিনা সরকারের আমলে রাস্তা পাকা করণের জন্য বরাদ্দ আসলেও আওয়ামী লীগের নেতারা এই রাস্তা পাকা না করে বরাদ্দটি অন্য জায়গায় নিয়ে যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক ইউনিয়নের ধাড়িয়া বাজার থেকে কালকী গ্রাম পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তায় উন্নয়নের কোনো ছোয়ায় লাগেনি। কয়েকদিনের দফায় দফায় বৃষ্টিতে পুরো রাস্তা কাদায় একাকার হয়ে গেছে। কোনো যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, মানুষই ঠিকমত হাঁটতে পারছে না। প্রতিনিয়তই পথচারী ও যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা রাস্তার অভাবে স্কুলে যেতে পারছে না।
কালকী গ্রামের বাসিন্দা হৃদয় আহম্মেদ আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের এই রাস্তার দুর্ভোগ দেখার কেউ নাই। শুধু নির্বাচন আসলে রাস্তা পাকা করার প্রতিশ্রুতি দেয়। নির্বাচনের পর আর কারো খবর থাকেনা।
তিনি আরো বলেন, বৃষ্টি হলে শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষের কষ্ট বেড়ে যায় কয়েক গুণ। কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তায় চলাচল বন্ধ হয়েছে। কর্মজীবী মানুষরা জীবিকার তাগিদে কষ্ট করে যাতায়াত করলেও স্কুল-কলেজে যাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। এতে করে ব্যহত হচ্ছে তাদের লেখাপড়া।
ওই গ্রামের মহিলা দলের নেতৃ শাহেরা আক্তার বানু বলেন, বিগত সময়ে আমি দুইবার মহিলা মেম্বার পদে নির্বাচন করেছি এবং জনগণ আমাকে বিপুল পরিমাণ ভোট দিয়েছে। কিন্তু বিএনপি করি বিধায় আমাকে নির্বাচিত করা হয়নি। আমাদের এলাকাটা খুবই অবহেলিত। এই রাস্তা নিয়ে আমরা অনেক কষ্টে আছি। দুঃখ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, এই গ্রামের কেউ যদি গুরুতর অসুস্থ হয়, তাহলে হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতেই তার অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। আমাদের একটাই দাবি, আমাদের গ্রামের রাস্তা পাকা হোক।
একই এলাকার কৃষক আব্দুল গোফফার বলেন, আমরা অনেক পরিশ্রম করে চাষাবাদ করি। অথচ যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না থাকায় সেই ফসল বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে যাওয়ার সময় অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এবার বৃষ্টির কারণে রাস্তার এমন দুরবস্থা হয়েছে যে, ফসল হাটে নিয়ে যেতে পারিনি। ফলে এবারের ফসল ঘরেই নষ্ট হয়ে গেলো। এভাবে আর কতদিন কষ্ট করবো আমরা?
কিচক ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন বলেন, বিগত কয়েক বছর যাবৎ চেষ্টা করতিছি এই রাস্তার জন্য। কিন্তু কোনোভাবেই কাজ হচ্ছে না। এই রাস্তাটি যেন দ্রুত পাকা হয় সে চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ জানান, ইতিমধ্যেই ইউএনও মহোদয় ওই রাস্তাটি পরিদর্শন করেছেন। যেহেতু এখন জুন মাস ক্লোজিং তো, সম্ভবত সে জন্য একটু দেরি হবে। নতুন অর্থবছরের বাজেট হলেই কাজ হবে ।
অথচ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান মানবকণ্ঠকে জানান, রস্তাটি বিষয়ে আমি অবগত নই। আপনাক থেকেই শুনলাম মাত্র। খোজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Comments